যুগ যুগ ধরে ঝর্ণার জল-ই ভরসা দুর্গাপুরের এই গ্রামে, বিক্রিও হচ্ছে সেই জল
প্রযুক্তির যুগেও অম্লান প্রাকৃতিক ঝর্ণার গুরুত্ব
দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: যত দিন যাচ্ছে টেকনোলজি উন্নত হচ্ছে। এগিয়ে চলেছে পৃথিবী। কিন্তু পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের সরপি গ্রামের এক জায়গায় গিয়ে মনে হয় যেন সময় থমকে গিয়েছে। যুগ যুগ ধরে সেখানকার বাসিন্দারা পান করে চলেছেন স্থানীয় রামসায়ের ঝর্নার জল। শুধু পান করাই নয়, সেই জল বোতলবন্দী করে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেকেই। বছরের পর বছর ধরে সেই ট্রাডিশন চলছে সেখানে।
রামসায়ের ঝর্ণার জল দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের প্রিয় পানীয়জল। এলাকার প্রবীণদের দাবি, আগে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছিল লাল মোরাম ও পাথরের মালভূমি। তার মাঝ থেকেই থেকেই উৎসারিত হতো ঝর্ণার জল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাথর ও মোরাম কাটতে কাটতে মালভূমি এক সময় প্রায় সমতল হয়ে যায়। কিন্তু জলের ধারা আজও অক্ষুণ্ণ। জানা গিয়েছে, এটি আসলে একটি আর্টেজিয় কূপ। নিরন্তর জল উৎসারিত হতে থাকে এখানে।
(BCREC & Group of institutions । পূর্ব ভারতের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 933927844, 9832131164, 9932245570, 9434250472)
আগে কলসি নিয়ে গ্রামের মহিলারা যেতেন সেখানে। জল ভরে কলসি কাঁখে বাড়ি ফিরতেন তাঁরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ধারা বদলে গিয়েছে। পরের দিকে সুবিধার জন্য সাইকেলে করে ড্রাম নিয়ে গিয়ে জল আনতে শুরু করেন পুরুষেরা। প্রয়াত সিপিএম সাংসদ সুনীল খাঁ জল যাতে সহজে গ্রামবাসীরা নিতে পারেন, সেজন্য প্রশাসনের উদ্যোগে স্থায়ী ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেন। ২০০৬ সালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জলের উৎসগুলির সংরক্ষণের জন্য তৈরি হয় আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভার। সেই রিজার্ভার থেকে জল উপচে গিয়ে পড়ে পাশের একটি জলাধারে। সেখান থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা জল নিয়ে যান।
জানা যায়, এই কূপের জল নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর। এতে প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান বিদ্যমান। ঘরের প্রয়োজনে তো বটেই, অনেকে টোটোয় করে জারে ভরে জল নিয়ে যান। এরপর সেই জল বিক্রি করেন বিভিন্ন জায়গায়। এভাবে কেউ কেউ গড়ে প্রতিদিন ২০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন। সেই জল পৌঁছে যায় দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায়, উখড়া সহ অন্যান্য় জায়গায়। এভাবেই রামসায়ের এর ঝর্ণা মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি তাদের জীবিকা নির্বাহের পথও প্রশস্ত করে চলেছে দিনের পর দিন। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)


