দুর্গাপুর দর্পণ, ১৫ জুন ২০২৪: পশ্চিম বর্ধমান জেলার (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের কাঁকসার দেউলের গড় জঙ্গলের ভিতরে বেলাগাম অরণ্য নিধনের অভিযোগ! ৩০ বছর ধরে তাঁর দখলে রয়েছে গড় জঙ্গলের মহর্ষি মেধাশ্রম। সেই এলাকা থেকেই পাচার হচ্ছে বড় বড় শাল, সেগুন, মহুয়া, শিমুল গাছ। ফাঁকা হচ্ছে গভীর জঙ্গল। তবুও চুপ কেন সেই যোগীনাথ ব্রহ্মানন্দগিরি? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এলাকায়।
বহু কাল আগে রাজা সুরথ যুদ্ধে পরাজিত হয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ সমাধি বৈশ্যকে নিয়ে গড় জঙ্গলের মাঝে আশ্রয় নেন। মেধা মুনির নির্দেশে শুরু করেন বসন্তকালে দুর্গাপুজো। সেখানেই বিশ্বের প্রথম দুর্গাপুজো হয়েছিল বলেও প্রচলিত। তখন বাঘ, সিংহ জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতো। ভয়ে জঙ্গলে কেউ পা মারাতেন না। দিন বদলেছে।
( Dr. BC Roy Engineering College & Group of institutions । পূর্ব ভারতের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যোগাযোগ- 933927844)
সেই সুরথ রাজার গড় তিন দশক ধরে দখলে রয়েছে সাধু যোগীরাজ ব্রহ্মানন্দ গিরির। জঙ্গলের মাঝে কয়েক একর জমি জুড়ে রয়েছে তাঁর মহর্ষি মেধাশ্রম নামে আশ্রম। সেখানে দুর্গার নিত্যপুজোও হয়। বিশেষ বিশেষ তিথিতে চলে পুজো পাঠ। বহু মানুষের সমাগম হয়। কয়েক বছর ধরে সেখানে গড়ে তোলা হচ্ছে পাকা নির্মাণ। তাঁর আশপাশেই দেখা যাচ্ছে বহু বড় বড় গাছ পড়ে রয়েছে কাটা অবস্থায়। আশ্রমের পিছনেই কাটা অবস্থায় পড়ে একটি বড় শিমুল গাছও। জঙ্গলে তাকালেই দেখা যাচ্ছে, গাছের গোড়া আছে কিন্তু ডালপালা উধাও।
এই এলাকা বর্তমানে সবাই চেনে ‘যোগী বাবার’ গড় হিসাবে। তাহলে সেই গড় থেকে কিভাবে কাটা হচ্ছে বড় বড় গাছ। রাতের অন্ধকারে পাচারই বা কি করে হচ্ছে, উঠছে প্রশ্ন। বন দফতরের নজরদারি নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। বন দফতরের একটি সূত্রের, নজরে আসতেই মুচিপাড়া অফিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছান। যখন তাঁকে এই ভাবে বন দফতরের জমি দখল করতে নিষেধ করা হয় তখন তিনি বচসা শুরু করে দেন।
তারপরেই যোগীরাজ ব্রহ্মানন্দ গিরিকে নোটিশ দেয় বন দফতর। এভাবে বন দফতরের জমি দখল করলে বন সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘনের দায়ে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্রহ্মানন্দ গিরি বলেন, “আমি ১৯৯০ সাল থেকে এখানে রয়েছি। জঙ্গলকে সাজিয়ে তুলেছি। হরিণ, ময়ূর এবং বন্য জীবজন্তুদের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য জলাশয় খনন করেছি। আমরা নিয়মিত বৃক্ষরোপণ করি। কিছু গাছ কাটতে হয় পুজোর কাজের জন্য। তবে গাছ পাচার বা গাছ চুরির ঘটনা এখানে ঘটে না।”
এবিষয়ে দুর্গাপুর রেঞ্জের রেঞ্জার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একটি শিমুল গাছ কেটেছিলেন যোগীরাজ ব্রহ্মানন্দ গিরি। আমাদের নজরে আসতেই সেখানে পৌঁছে যান কর্মীরা। ৩দিনের মধ্যে বন দফতরের অফিসে আসার নির্দেশ দিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি এসেছিলেন। এই ধরণের ঘটনা ভবিষ্যতে আর ঘটবে না এবং গাছ লাগাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। আমাদের কড়া নজরদারি থাকছে।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।