দুর্গাপুর দর্পণ, ১ জুলাই ২০২৪: এক বছর দশেকের কিশোরীর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে সোমবার বিকালে পশ্চিম বর্ধমান জেলার (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ধুন্ধুমার বেধে যায়। রবিবার রাতে মস্তিষ্কের সমস্যা নিয়ে দুর্গাপুরের শোভাপুর সংলগ্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় পাণ্ডবেশ্বরের কেন্দ্রার স্বস্তি কুমারী পাশোয়ানকে। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, এক ঘন্টা পর রিপোর্ট দেওয়া হবে জানানো হলেও দেওয়া হয়নি রিপোর্ট।
সোমবার সকালে হাসপাতাল থেকে ফোনে জানানো হয়, চিকিৎসক কথা বলতে চান পরিবারের সাথে। অভিযোগ, দেড় ঘন্টা ধরে বসিয়ে রাখার পরেও স্বস্তির মায়ের সঙ্গে কথা বলেননি কোনও চিকিৎসক। এরপর তার বাবা এবং পরিবারের বেশ কয়েকজন হাসপাতালের ভিতর যাওয়ার চেষ্টা করলে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের মারধর করে বলে অভিযোগ। তারপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবার-পরিজন এবং আত্মীয় স্বজনেরা।
সোমবার বিকেলে ফের স্বস্তি কেমন আছে জানার চেষ্টা করলে নিরাপত্তারক্ষীরা দুর্ব্যবহার করে এবং মারধর করে বলে অভিযোগ। তারপরেই শুরু হয় নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে বচসা। শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। পরিস্থিতি সামাল দিতে পৌঁছায় দুর্গাপুর থানার পুলিশ। স্বস্তির দিদিমা বীমা দেবী জানান, স্বস্তির মস্তিষ্কের সমস্যা বাড়লে প্রথমে পাঞ্জাবি মোড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আনা হয় গান্ধী মোড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকেরা শোভাপুরের বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। রাত প্রায় বারোটার সময় ওই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বস্তিকে ভর্তি করা হয়। এক ঘন্টা পর রিপোর্ট দেওয়ার কথা জানান চিকিৎসকরা। কিন্তু কয়েক ঘন্টা পরেও রিপোর্ট দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
বীমা দেবীর আরও অভিযোগ, ফের সকালে স্বস্তির মাকে দীর্ঘক্ষণ ধরে বসিয়ে রাখা হয় কিন্তু মেয়েকে দেখতে দেওয়া হয়নি। কিছুক্ষণ পর পরিবারের লোকজন স্বস্তিকে দেখতে যাওয়ার চেষ্টা করলে মারধর করা হয়। দীর্ঘক্ষণ পর স্বস্তিকে দেখতে দেওয়া হলে দেখা যায়, মুখে সাদা সেলোটেপ এবং পেট কেটে পাইপ ঢোকানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের মেয়েকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল চিকিৎসকরা। আমরা শাস্তি চাই।” ওই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিইও সুপর্ণা সেনগুপ্ত বলেন, “প্রথম থেকেই আশঙ্কাজনক ছিল স্বস্তি। পরিবার জানিয়েছিল, মাথায় যন্ত্রণা এবং কাশির সময় রক্তও বেরিয়েছে। সেজন্য নতুন করে মস্তিষ্কের স্ক্যান করা যায়নি। পুরনো রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ব্রেনে টিবি হয়েছে। তাই ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছিল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে। বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।