দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: সাবধান! সাইবার গ্যাং নিত্য নতুন ফন্দি এঁটেই চলেছে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দেওয়ার জন্য। পশ্চিম বর্ধমান জেলার (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরে তেমন এক প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। গ্রাহক এটিএম ব্যবহার করেন না। তাঁর সই জাল করে ব্যাঙ্ক থেকে চেকবুক তুলে সেই চেক দিয়ে দেড় লক্ষ টাকা গায়েব করে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। সিটি সেন্টারের এডিডিএ ভবনে থাকা একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কে ঘটনাটি ঘটেছে। ব্যাঙ্কে ও সাইবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। ব্যাঙ্কের কর্মীদের বিরুদ্ধেও অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছেন তিনি।
দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের সি জোনের বাসিন্দা স্বাগতা মুখোপাধ্যায় তেওয়ারির অ্যাকাউন্ট রয়েছে সিটি সেন্টারের ওই ব্যাঙ্কে। গত ১৬ বছর ধরে বাবা রবীন্দ্রনাথ তেওয়ারির সঙ্গে জয়েন্ট সেভিংস অ্যাকাউন্ট চলছে। চেক শেষ হয়ে যাওয়ায় ১২ আগস্ট স্বাগতা নতুন চেক বইয়ের জন্যে ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন করেন। শুক্রবার নতুন চেক বই নিয়ে পিওন স্বাগতাদেবীর ঘরে গিয়ে তাঁকে পাননি। চেক বই আনডেলিভার্ড বলে ফেরত চলে যায় ব্যাঙ্কে। এরপরই শুরু হয় আসল ঘটনা।
(The Mission Hospital. দেশের সেরা চতুর্থ হাসপাতাল এখন দুর্গাপুরে। যোগাযোগ- 8687500500 )
ব্যাঙ্ক থেকে ফোন করে সোমবার ব্যাঙ্কে গিয়ে চেক বই নিয়ে যাওয়ার জন্যে বলা হয় স্বাগতাকে। কিন্তু তিনি সেদিন যেতে পারেননি। মঙ্গলবার সকালে ব্যাঙ্কে যাওয়ার জন্য বেরোচ্ছেন। সেই সময়ই তাঁর মোবাইলে মেসেজ আসে যে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে। স্বাগতা এটিএম কার্ড ব্যবহার করেন না। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বাবাকে নিয়ে ব্যাঙ্কে যান। ব্যাঙ্ক থেকে জানানো হয়, স্বাগতা কমলেশ মারান্ডি বলে একজনকে ওই চেক বই তোলার অনুমতিপত্র দিয়েছেন। সেই অনুমতিপত্রের নিচে স্বাগতার স্বাক্ষর করা আছে। সেই অনুমতিপত্র দিয়ে সোমবারই কমলেশ মারান্ডি চেক বই নিয়ে চলে গিয়েছে।
স্বাগতা জানান, এমন কোনও অনুমতিপত্র তিনি কাউকে দেননি। কমলেশ মারান্ডি বলে কাউকে তিনি চেনেন না। ব্যাঙ্কের কর্মীরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে কমলেশকে দেখান। স্বাগতা জানান, তিনি অপরিচিত। এই সময়ে আচমকা এক হিন্দিভাষী মহিলা ব্যাঙ্ক কর্মী তাঁর সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। এমন কি স্বাগতাকেই প্রতারক বলে চিৎকার করতে থাকেন। স্বাগতা বলেন, “ওই ব্যাঙ্কে আমার নতুন চেক বই আছে সেটা আমি আর ওই ব্যাঙ্কের কয়েকজন কর্মী ছাড়া কারওরই জানার কথা নয়। আমার স্বাক্ষর ওই ব্যাঙ্কের কর্মীদের ছাড়া জানার কথা নয়। এই প্রতারণার সঙ্গে ব্যাঙ্কেরই কেউ জড়িত বলে আমার মনে হচ্ছে।”
বুধবার দুর্গাপুর সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্বাগতা। ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সিটি সেন্টার শাখার চিফ ম্যানেজার সুনীল সাহু জানান, “উনি টাকা পেয়ে যাবেন। আমরা ব্যাঙ্কের তরফে তদন্ত করব। ব্যাঙ্ক থেকেও থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে।” আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি (সাইবার ক্রাইম) বিশ্বজিৎ নস্কর জানান, “চেক জালিয়াতির একটা অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” পুলিশের একটি সূত্রে মনে করা হচ্ছে, ওটিপি দিয়ে বা এটিএম কার্ড দিয়ে জালিয়াতির উপর পুলিশের নজরদারি বাড়ায় জামতাড়া গ্যাং নতুন ফন্দি এঁটেছে প্রতারণার। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।