দুর্গাপুর দর্পণ, ২৭ জুন ২০২৪: জবর দখল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তার পরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। তবে পশ্চিম বর্ধমান জেলার (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুর শহরে এখন পর্যন্ত তেমন উদ্যোগ নজরে আসেনি। যদিও এডিডিএর চেয়ারম্যান কবি দত্ত বলেন, “জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ করা হবেই। সে তিনি যেই হোন!” জানা গিয়েছে, সিটি সেন্টার এলাকায় কয়েকটি দোকানে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কবিগুরু রোডের বেশ কিছুটা জুড়ে দু’পাশ ব্যাপক ভাবে জবরদখল হয়ে গিয়েছে গত ৩-৪ বছরে। সেখানে অবশ্য বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত একটি দোকানেও নোটিশ দেওয়া হয়নি।
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার থেকে সেপকো টাউনশিপ, ডিএসপি টাউনশিপ, বিধাননগরের একাংশ যাওয়ার প্রধান সড়ক কবিগুরু রোড। এই রাস্তার ভগৎ সিংহ মোড় থেকে প্রায় পাঁচশো মিটার পর্যন্ত রাস্তার দুপাশ ভরে গিয়েছে জবর দখলে। দিনের ব্যস্ত সময়ে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা কার্যত দূরহ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যে কোনও সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা মাথায় নিয়ে যাতায়াত করতে হয়, এমনই অভিযোগ করেছেন শহরবাসীর একাংশ।
( BCREC & Group of institutions । পূর্ব ভারতের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 933927844, 9832131164, 9932245570, 9434250472)
তাঁরা জানিয়েছেন, দুপাশে সারি দিয়ে দোকান। কোনও দোকানের সামনের অংশটা আরও বাড়ানো। সেই সব দোকানের সামনে মাঝে মাঝেই দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ি, বাইক। ফলে রাস্তা আরও সংকীর্ণ হয়ে যায়। এই রাস্তা দিয়ে বহু মহিলাকে দেখা যায় স্কুটিতে চড়িয়ে ছেলে-মেয়েকে সিটি সেন্টারের বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে পৌঁছে দিতে বা ফিরিয়ে আনতে। চরম ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের যাতায়াত করতে হয়। আবার ওই সংকীর্ণ রাস্তাতেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বাইক, গাড়ি সহ অন্যান্য যানবাহন। ট্রাফিক পুলিশের দেখা কখনও মেলে না সেখানে।
আসানসোল থেকে এই শহরে ছেলেকে পড়ানোর জন্য এসেছেন অনিমা পোদ্দার। তিনি থাকেন ডিএসপি টাউনশিপের বি-জোনে। তিনি বলেন, “ছেলেকে নিয়ে কবিগুরু রোড দিয়ে যেতে রীতিমতো আতঙ্কে থাকি। যে কোনও সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারি। প্রশাসনের উচিত, অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া।” চন্ডীদাস এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা অমিতাভ দত্ত বলেন, “কয়েক বছর আগেও রাস্তার দুপাশ ফাঁকা ছিল। কিন্তু তারপরে পর পর দোকান বসে গেল। পুরসভা, প্রশাসন, পুলিশ কেউ কিছু বলল না। সাধারণ মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। জবরদখল এই শহরে নিয়মে পরিণত হয়েছে।” সেটা যে সত্যি তা প্রমাণ হল কবিগুরু রোডের এক দোকানদার সৌরেন দে এর সঙ্গে কথা বলে। তাঁর সাফ কথা, “তেমন কিছু নয়। পাবলিক কেউ কখনও তো আমাদের বলেনি সমস্যা হচ্ছে। বললে সরিয়ে দেব।”
একজন কেউ জবর দখল করলে বাকিরা তাকে অনুসরণ করে। এভাবেই ফাঁকা জায়গা রাতারাতি দখল হয়ে যায়। যেমন কবিগুরু রোডের আর এক দোকানদার রঘুনাথ রায় বললেন, “সবাই করছে দেখে আমিও বসে পড়েছি। এখন নোটিশ দিলে যতটা ছাড়তে বলবে, ছেড়ে দেব।” এই পরিস্থিতিতে কবে শেষ পর্যন্ত এই সব দোকানে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়, সেটাই এখন দেখার। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।