দুর্গাপুর: কলকাতার বাইরে রাজ্যে প্রথমবারের মতো দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত যুবতীর ইন্দো-সায়ানাইন গ্রিন (ICG) ডাই ও ইরলিক মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে সফল সেন্টিনেল নোড স্যাম্পলিং এবং বায়োপসি (SLNB) অপারেশন করা হল। মধ্য তিরিশের ওই যুবতী তাঁর ডানদিকের স্তনে একটি ছোট দেড় সেন্টিমিটার ক্যান্সারযুক্ত পিণ্ড নিয়ে মিশন হাসপাতালের সার্জিক্যাল অনকোলজি ওপিডিতে আসেন। চিকিৎসকদের কাছে তিনি জানান, অস্ত্রোপচারের পরে স্তনের সম্ভাব্য পরিস্থিতি, লিম্ফেডেমা, ফ্রোজেন শোল্ডার হওয়ার আতঙ্ক, এসব নিয়ে তিনি চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে আশ্বস্ত করেন।
সেন্টিনেল নোড বায়োপসি হল ক্যান্সার মূল টিউমারের বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার একটি পদ্ধতি। সেন্টিনেল নোড হল প্রথম কয়েকটি লিম্ফ নোড যেখানে ক্যান্সার শুরু হয়। সেখান থেকে লিম্ফ নোডে সরিয়ে পড়ে। সারা শরীর জুড়ে লিম্ফ নোড রয়েছে। লিম্ফ নোডগুলি শরীরে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। সারা শরীরে লিম্ফ নোড পাওয়া যায়। ক্যান্সার কোষগুলি লিম্ফ নোডগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছে কিনা তা দেখতে সেন্টিনেল নোড বায়োপসি ব্যবহার করা হয়। চিকিৎসক সেন্টিনেল নোডগুলি খুঁজে সেগুলি সরিয়ে ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠান। যদি সেন্টিনেল নোডগুলি ক্যান্সার মুক্ত থাকে, তবে ক্যান্সার সম্ভবত ছড়িয়ে পড়েনি। এর মানে হল যে অতিরিক্ত লিম্ফ নোডগুলি অপসারণ করার প্রয়োজন নেই। প্রসঙ্গত, এক জায়গা থেকে অনেকগুলি লিম্ফ নোড সরানো হলে লিম্ফেডেমা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
(The Mission Hospital. দেশের সেরা চতুর্থ হাসপাতাল এখন দুর্গাপুরে। যোগাযোগ- 8687500500)
হাসপাতালের সার্জিক্যাল অনকোলজির চিকিৎসক দল ওই যুবতীর সঙ্গে স্তন সংরক্ষণ, সেন্টিনেল নোড বায়োপসি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং তাঁকে আশ্বস্ত করেন। প্রয়োজনীয় স্ক্যান করার পর অপারেশন হয়। অপারেশনের ২ দিন পর ওই যুবতী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। হাসপাতালের সার্জিকাল অনকোলজি কনসালটেন্ট ডা. অর্ণব চক্রবর্তী জানান, আইউসিজি ব্যবহার করে সবচেয়ে নির্ভুল ভাবে সেন্টিনেল নোড সনাক্তকরণ করা সম্ভব হয়। তাছাড়া এই পদ্ধতিতে ব্যথা, লিম্ফেডেমা, ফ্রোজেন শোল্ডার এর মতো সমস্যা এড়ানো যায়। এছাড়াও, রোগীকে হাসপাতালে খুব কম সময় থাকতে হয়। অপারেশনের এক দিন পরেই রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া যেতে পারে।
মিশন হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. সত্যজিৎ বসু জানান, একটি সর্বাধুনিক আন্তর্জাতিক মানের ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরির কাজ চলছে। সেই হাসপাতাল চালু হয়ে গেলে ক্যান্সার চিকিৎসার নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। এছাড়া উন্নততর চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে মিশন হাসপাতালে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রযুক্তির রোবট আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।