পিত্তথলিতে আশঙ্কাজনক ‘সেপসিস’, জটিল অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচল ২৮ বছরের তরুণীর

দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: পিত্তথলিতে আশঙ্কাজনক ‘সেপসিস’ নিয়ে পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন দুই সন্তানের মা, ২৮ বছরের এক তরুণী। তাঁকে যখন হাসপাতালে আনা হয়, তার এক সপ্তাহ আগে থেকে তাঁর খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ইনজেক্ট করে তরল খাদ্য দিতে হত তাঁকে। অত্যন্ত জটিল এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা নির্ভর উচ্চস্তরের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তরুণীকে কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনল মিশন হাসপাতাল।
পিত্তথলির পাথরের রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। যখন তাঁকে মিশন হাসপাতালে আনা হয়, তার ১০ দিন আগে থেকে লাগাতার পেট ব্যথা ও জ্বরে ভুগছিলেন। তার আগে অন্য একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করান। সেখানে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। কিন্তু তার অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। মিশন হাসপাতালে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তরুণীর গুরুতর রক্তাল্পতা (Hemoglobin: 6 g/dL), রক্তে অতিরিক্ত সংখ্যক শ্বেতকণিকার উপস্থিতি (স্বাভাবিক পরিমাণ: up to 11,000/mm³, সেখানে তরুণীর ছিল 28,000/mm³) এবং থ্রম্বোসাইটোসিস ((platelet count: 1 million/mm³) এর উপসর্গ রয়েছে। প্রস্রাবের পরিমাণ ন্যূনতম, রক্তচাপও কম ছিল। রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষার ফলে তরুণীর Type III Mirizzi syndrome with bilateral cholangiolar abscesses ইঙ্গিত পাওয়া যায়। সার্বিক ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় বোঝা যায়, Severe Cholangitis with transient multiorgan failure এর সমস্যায় ভুগছেন ওই তরুণী।
(The Mission Hospital. দেশের সেরা চতুর্থ হাসপাতাল এখন দুর্গাপুরে। যোগাযোগ- 8687500500)
সঙ্গে সঙ্গে ব্রড-স্পেকট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা শুরু হয়। শুরু হয় subcutaneous anticoagulation therapy। স্টেন্টিং সহ একটি ERCP করার পরিকল্পনা করেন চিকিৎসকেরা। তাঁকে দুই ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়। শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা স্বাভাবিক হওয়ার পর, তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রোগীর স্টেন্ট ব্লকেজ দেখা দেয়। তাই আরও প্রশস্ত স্টেন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এর এক মাস পরে, গ্যাস্ট্রোসার্জন এবং এইচপিবি সার্জন ডাঃ বিজিত সাহার (Mch surgical Gastroenterology and Hepatobiliary Pancreatic Surgeon AIIMS) তত্বাবধানে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অস্ত্রোপচারের সময় কোলন, ডুওডেনাম এবং পাকস্থলীর অ্যান্ট্রামে ব্যাপক আঠালো ভাবে লেগে থাকা স্ফীত পিত্তথলির খোঁজ পাওয়া যায়। পোর্টা হেপাটিস উল্লেখযোগ্যভাবে ফোলা ছিল। ব্যবচ্ছেদের জটিলতার কারণে, subtotal cholecystectomy with choledochoduodenostomy করা হয়। অস্ত্রোপচারের পরে দ্রুত অবস্থার উন্নতি হতে থাকে তাঁর। অস্ত্রোপচারের তিন দিন পরে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সুস্থ হয়ে তিনি বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। সময় কাটাচ্ছেন তাঁর দুই সন্তানের সঙ্গে। ডাঃ বিজিত সাহা বলেন, “এভাবেই সময়মত রোগ নির্ণয়, ধাপে ধাপে চিকিৎসা এবং উপযুক্ত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জটিলতর রোগ থেকে মানুষকে বাঁচিয়ে তোলা যায়।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)

