দুর্গাপুর দর্পণ, ২৯ জুন ২০২৪: “দুর্গাপুরের ওয়ার্ডগুলিতে কাজ হচ্ছে না সৌন্দর্য্যায়নের। এত টাকা খরচ করেছি কিন্তু দেখার কেউ নেই।” সম্প্রতি পশ্চিম বর্ধমান জেলার (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুর পুরসভা নিয়ে এমনই খেদ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ যে কতটা সত্যি, তার প্রমাণ পাওয়া গেল দুর্গাপুরের ২১নং ওয়ার্ডের রাঁচি কলোনিতে পুরসভার পার্কে গিয়ে। চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, ২০১৩ সালে তৎকালীন কাউন্সিলর চন্দন সাহার উদ্যোগে রাঁচি কলোনিতে দুর্গাপুর পুরসভা পার্কটি গড়ে তোলে। পার্কে বেশ কয়েকটি দোলনা, বসার জায়গা করা হয়। ফুলের গাছ লাগানো হয়। একটি স্থায়ী শেডও গড়ে দেওয়া হয়। মনোরম পরিবেশে বাচ্চারা খেলাধুলা করত। পাশাপাশি বড়রা আসতেন ঘুরতে। শেডে প্রতিবছর আড়ম্বর সহকারে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়।এলাকাবাসীর অভিযোগ, ১০বছর পরে সেই পার্ক কার্যত আজ পরিণত হয়েছে খাটালে। কারণ, দেখভাল করার কেউ নেই। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, চারিদিকে চড়ে বেড়াচ্ছে গরু, মোষ, ছাগল। ডাঁই করে রাখা আছে গোবর ও ঘুঁটে। চুরি হয়ে গিয়েছে দোলনা। ভেঙে পড়েছে খেলনার সামগ্রী। পাঁচিলও ভেঙে পড়ছে। আগাছার জঙ্গল। চারিদিকে দুর্গন্ধ। স্থানীয়রাই জানাচ্ছেন, সন্ধ্যা নামলে এই পার্কে নানা অসামাজিক কাজকর্ম হয়ে থাকে। মদ, জুয়ার আসর বসে। একসময় শৌচালয় চালু ছিল। এখন তা তালাবন্ধ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই পার্ক দখল করে রেখেছে এলাকার বেশ কিছু খাটাল মালিক। প্রতিবাদ করলে হুমকি দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে এলাকার কাউন্সিলর হন সুস্মিতা ভূঁই। পাঁচটা বছর পেরিয়ে গেল। পার্কের উন্নয়ন তো দূরের কথা, দখল মুক্তও করতে পারেননি। ২০২২ সালে পুর সভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় তিনি এখন প্রাক্তন কাউন্সিলর। পার্কের এই অবস্থা নিয়ে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরারও সময় করে উঠতে পারেননি।
(Dvita Eye Care। কলকাতার বাইরে সেরা চোখের হাসপাতাল। যোগাযোগ- 0343-6661111)
আসছে পুরসভার নির্বাচন। তার আগে পাড়ার পার্কের এই বেহাল দশা নিয়ে চরম ক্ষোভ স্থানীয়দের। এলাকাবাসী জীবনকৃষ্ণ সেন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর ফুটপাত দখলকারীদের হঠানোর জন্য নানান পদক্ষেপ নিচ্ছে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ। কিন্তু এই পার্কটি খাটাল মালিকেরা দখল করে রেখেছে। খেলার মত আর পরিস্থিতি নেই। পার্কটির দিকে তাকালে আর যেতে ইচ্ছা করে না। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” সম্প্রতি দুর্গাপুরের পুর প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে। পুলিশ, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ ও পুরসভা যৌথভাবে অবৈধ দখলদারি সরানোর জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।” পার্কের দিকে কবে তাঁর নজর পড়ে সেটাই এখন দেখার। বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপির জেলা সহ সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সব অবৈধ দখলদারি উচ্ছেদের কথা বলছেন। কিন্তু দুর্গাপুর পুরসভা হাত গুটিয়ে বসে আছে। টাকা নিয়ে এই সব কাজ করিয়েছেন এলাকার তৃণমূলের নেতারাই।” তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।