দুর্গাপুর দর্পণ, ২ মে ২০২৪: সন্ধ্যা নামলেই বেপরোয়া গতিতে একের পর এক ওভারলোড বালি গাড়ি যায় গ্রামের ভেতর দিয়ে। এর জেরে কয়েকদিন আগে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে মৃত্যু হয় এক গ্রামবাসীর। বালির গাড়ির উৎপাতে নাজেহাল গ্রামবাসীরা। বুধবার সন্ধ্যায় গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ জানালে মহিলাদের ওপর চড়াও হয় ট্রাক চালকেরা। প্রতিবাদে শুরু হয় পথ অবরোধ। পুলিশ পাশে না থাকায় অসহায় অবস্থা গ্রামবাসীদের, এমনটাই দাবি বাসিন্দাদের।
কাঁকসার বিদবিহারের কাজলাডিহির পাশ হয়ে বয়ে গিয়েছে অজয় নদ। আর এই অজয় নদের ঘাট থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে ট্রাক্টরে করে রাধানগর গ্রামের রাস্তা দিয়ে নিয়মিত অজয় ঘাট থেকে মুচিপাড়া যাওয়ার রাস্তায় উঠে এই সমস্ত গাড়ি। পরে আশেপাশে এলাকায় এই অবৈধ বালি পৌঁছে যায়। সন্ধ্যা নামলেই প্রতিদিন চলে এই বালি পাচার। এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। তারা আরও জানিয়েছেন, বেপরোয়া গতিতে গ্রামের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত এই সমস্ত বালির গাড়ির। রাত নামলেই হুশ হুশ করে পেরিয়ে যায় এই গাড়ি। ফলে গ্রামের রাস্তায় চলাচল করা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তাদের দাবি, একদিকে যেমন বালি পাচারের গাড়ি চলে অন্য দিকে মাটি পাচারও চলছে রমরমিয়ে।
এদিন সন্ধ্যায় প্রতিবাদ করে গ্রামের বাসিন্দারা। এরপরেই ট্রাক চালকেরা মহিলাদের এবং এলাকাবাসীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং মারধরের হুমকি দেয়, এমনটাই অভিযোগ জানিয়েছেন দোলন গড়াই, নমিতা হাজরারা। লোকসভা নির্বাচনের আবহে এই বালি পাচার আরও বেড়েছে বলে দাবি তাদের। রাধানগরের বাসিন্দা স্বপন বাগদি, বাবুলাল বাগদিদের অভিযোগ, বুধবার সন্ধ্যায় বেপরোয়া গতিতে একের পর এক ওভারলোড বালি বোঝাই গাড়ি গ্রামের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিল। মহিলারা প্রতিবাদ করতে গেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে গাড়ির চালকরা। কিছুক্ষণ পরেই এলাকার দুটি বাড়িতে চড়াও হয় জীবন মণ্ডল ওরফে নাড়ু এবং রঞ্জিত হাড়ি। তারা বাড়ির ভিতরে ঢুকে মহিলাদের ওপর নির্যাতনের হুমকি দেয়। প্রতিবাদ করলে, গ্রামবাসীদেরও গুলি করে মারারও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। পুলিশের সাথেও চলে ধস্তাধস্তি। মধ্যরাতে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় কাঁকসার বিদবিহারের রাধানগরে। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্য বলেন,”বৈধ ঘাট থেকেই বালি তোলা হয় ওই এলাকায়। তারা তো রাস্তা দিয়ে যাবেই। অবৈধভাবে ওই এলাকায় বালি তোলা হয় বলে তার জানা নেই। যদি হয়ে থাকে তাহলে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত। এবিষয়ে তার কিছু বলার নেই। তবে তিনি খোঁজ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন।” বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিদবিহার অঞ্চলে বালি মাফিয়াদের অত্যাচারে গ্রামবাসীরা অতিষ্ঠ। নিরীহ গ্রামবাসবাসীরা প্রতিবাদ জানালে, তাদের খুন, ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। প্রশাসনকে আমরা জানিয়েছি বারবার। কিন্তু প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”