এখানে ক্লিক করে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন নিয়মিত আপডেট পেতে
দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর, ৫ আগস্ট ২০২১: Rarheswar Shiv Temple. দুর্গাপুরের মুচিপাড়া থেকে শিবপুর যাওয়ার রাস্তা ধরে কিছুটা এগোলে ডানদিকে ভেঙে গিয়েছে গোপালপুর যাওয়ার রাস্তা। সেই মোড়েই রয়েছে হাজার বছরের পুরনো রাঢ়েশ্বর শিব মন্দির। ধর্মীয় এবং প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন, দু’দিন থেকেই যার অসীম গুরুত্ব রয়েছে। এখান থেকেই শুরু বিস্তীর্ণ জঙ্গলের। সেই জঙ্গল বিস্তৃত অজয় নদের পাড় পর্যন্ত। বর্তমানে অবশ্য জঙ্গলের ঘনত্ব কমে গিয়েছে। বড় বড় গাছ আর তেমন নেই।
দেখুন এক্সক্লুসিভ ভিডিও
Rarheswar Shiv Temple.
রাঢ়েশ্বর শিব মন্দির রয়েছে কাঁকসা থানার আড়া গ্রামে। ওড়িশার রেখ দেউল পদ্ধতিতে আগাগোড়া স্থানীয় বেলে ও ঝামা পাথর দিয়ে তৈরি এই সপ্তরথ মন্দির। মাথায় রয়েছে শিখারা যা এলাকার অন্য কোনও মন্দিরে দেখা যায় না। মন্দিরটি অধিগ্রহণ করেছে প্রত্নতত্ব বিভাগ। তবে রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাছাড়া বেশ কয়েকবার মন্দিরের সংস্কারের দরুণ পূর্বের স্থাপত্য রীতিও কিছুটা হারিয়ে গিয়েছে। দুর্গাপুরের প্রাচীনতম শিব মন্দিরগুলির অন্যতম হল রাঢ়েশ্বর শিব মন্দির।
মন্দিরের প্রতিষ্ঠা নিয়ে মতান্তর আছে। কেউ বলেন, মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেন বংশের বিখ্যাত রাজা বল্লাল সেন। তিনি ছিলের রাঢ় দেশের অধিপতি। জনশ্রুতি, তিনি তখন জটিল রোগে আক্রান্ত। শয্যাশায়ী। একদিন রাজার স্বপ্নে ভগবান শিব দর্শণ দেন। তিনি আদেশ দেন, রোগমুক্ত হতে গেল তিনি শিব মন্দির নির্মাণ করুন। তিনি মন্দির নির্মাণ করেন এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন। তখন থেকে আজ পর্যন্ত নিত্যপুজো চলে আসছে।
আবার অন্য একটি মত হল, গোপভূমের রাজাদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন ঈশ্বর ঘোষের প্রপিতামহ। সমগ্র রাঢ়ের অধিপতি হওয়ায় তাঁকে রাঢ়াধিপ বলা হতো। দুর্গাপুরের রাঢ় গ্রামই ছিল তাঁর রাজধানী। পরে তা লোকমুখে রূপান্তরিত হয়ে আড়া নামে পরিচিত হয়। সমগ্র রাঢ়ের অধিপতি হওয়ায় তিনি নিজ রাজধানী রাঢ় তথা বর্তমানের আড়ায় শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। রাঢ দেশে মন্দির প্রতিষ্ঠা হওয়ায় নাম দেওয়া হয় রাঢ়েশ্বর শিব মন্দির।
Rarheswar Shiv Temple. মন্দিরের ভিতরে খুব অল্প পরিসরের গর্ভগৃহ রয়েছে। সেখানে পিনাক সমেত বিশালাকৃতির গ্রানাইট পাথরের তৈরি শিবলিঙ্গ একটি কূপের উপরে স্থাপিত। প্রতিদিন সকালে শিবলিঙ্গের শিঙ্গার করেন সেবাইতরা। যা, রুদ্র অভিষেক নামে পরিচিত। এরপর হয় পুজো ও আরতি। সারা বছর ভিড় লেগেই থাকে মন্দিরে। তবে শ্রাবণ মাসে ভক্তদের বিশাল লাইন পড়ে যায়। মন্দিরের উত্তরদিকে মাঝারি মাপের একটি পুকুর আছে। তার নাম কালদিঘী। এছাড়াও মন্দির ঘিরে রয়েছে পোড়েল পুকুর, আকুলেশ্বরী, রমনাদিঘী, মহাকাল দিঘী যা আড়া গ্রামের প্রাচীন ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করায়।
আরও পড়ুন- একদিনের জন্য ঘুরে আসুন ক্ষীরগ্রামের যোগাদ্যা মন্দিরে
আরও পড়ুন- একশো টাকায় দক্ষিণ ভারত ভ্রমণ