সনাতন গড়াই, দুর্গাপুর দর্পণ, কাঁকসা: রাজা লক্ষণ সেন গৌড় থেকে এসে কাঁকসার গড় জঙ্গলে আত্মগোপন করেন। স্বপ্নাদেশ পেয়ে জঙ্গলের ভিতর গড়ে তোলেন শ্যামারূপা দেবীর মন্দির। এই মন্দিরে সিদ্ধিলাভের আশায় কাপালিকের আনাগোনা শুরু হয়। নরবলি দেওয়া হতো। লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি জয়দেব নরবলি প্রথা বন্ধ করতে কাপালিককে দেবীকে শ্যামরূপে দর্শন করান। দাঁড়ি পড়ে নরবলি প্রথায়। তারপর থেকেই শ্যামারূপা মায়ের নাম হয় শ্যামরূপা।
লক্ষ্মণ সেন জঙ্গল ছেড়ে গৌড়ে ফিরে যাওয়ার সময় মন্দিরের দায়িত্ব দেন সেনাপতি ঢেকুরের সামন্ত রাজা ইছাই ঘোষকে। ইছাই ঘোষ এই মন্দিরে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন। উনিই প্রথম ষোড়শ উপাচারে দুর্গাপুজো করেন। কথিত আছে, বাংলায় প্রথম দুর্গাপুজোর সূচনা হয় এভাবেই। একবার দেবীর আদেশ লঙ্ঘন করে ইছাই ঘোষ অষ্টমীর সন্ধিক্ষণে যুদ্ধে যান এবং পরাজিত ও নিহত হন। এরপর ইছাই ঘোষের সহচররা দেবী মূর্তি বিসর্জন দিয়ে দেন। পরে স্থানীয়রা শ্বেত পাথরের মূর্তি স্থাপন করে দেবীর পুজো শুরু করেন।
(Dvita Eye Care। কলকাতার বাইরে সেরা চোখের হাসপাতাল। যোগাযোগ- 0343-6661111)
প্রতিদিন হয় নিত্যসেবা। তবে দুর্গাপুজোর সময় দেশ বিদেশ থেকে ভক্তরা আসেন। সেজে উঠে জঙ্গল। পুজো চারদিন প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ হাজার ভক্তের সমাগম হয়। অন্নকুটের ব্যবস্থা থাকে। অষ্টমীর সন্ধিক্ষণে অলৌকিক গর্জনে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। ঝাঁ চকচকে আলো আর থিমের ভিড়েকে টেক্কা দেয় এখানকার পুজো। ইতিহাসের সঙ্গে নিজেদের একাত্ম করে তুলতে অনেকেরই দুর্গাপুজোর সময় গন্তব্য হয়ে ওঠে কাঁকসার গড় জঙ্গলের শ্যামরূপা মন্দির। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।