দুর্গাপুর দর্পণ, ১২ জুন ২০২৪: প্রিয় শিক্ষকের বদলি ঠেকাতে সকাল থেকে স্কুলে তালা লাগিয়ে পড়ুয়াদের নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অভিভাবকেরা। পশ্চিম বর্ধমান জেলার (Paschim Bardhaman) কাঁকসার প্রয়াগপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা।
জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে টিচার ইনচার্জের দায়িত্ব নিয়ে এই স্কুলে রাজেশ কুমার অধিকারী। তখন পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল প্রায় ৮০ জন। বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১৪২ জন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শিক্ষাদানের পাশাপাশি নজর রেখেছেন যাতে পড়ুয়ারা নিয়মিত স্কুলে আসে, স্কুল ছুট না হয় সেদিকে।
অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা নিম্নবিত্ত। ছেলে-মেয়েরা তাই সরকারি স্কুলেই পড়ে। এই শিক্ষক স্কুলে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পঠন-পাঠন অনেক উন্নত হয়েছে। কোনও পড়ুয়া স্কুলে না গেলে তিনি ছুটির পর পড়ুয়াদের বাড়িতে গিয়ে তার খোঁজ খবর নেন। দরকার হলে বাড়িতেই তাকে পড়ানোর ব্যবস্থা করেন। সরকারি সুযোগ-সুবিধা যা স্কুলে আসে, সব তিনি অভিভাবকদের অবগত করেন।
বর্তমানে তিনি অন্য একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন। তাই বদলি নির্দেশ এসেছে। সেই খবর আসতেই স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। তিনি স্কুল থেকে চলে গেলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে দাবি তাঁদের। যদিও ওই শিক্ষক জানিয়েছেন, এলাকাবাসীর এত ভালবাসা পেয়ে শিক্ষক হিসাবে তিনি গর্বিত। কিন্তু বদলির সরকারি নির্দেশ তাঁকে মানতে হবে। তাই তাঁকে যেতে হবে অন্য স্কুলে।
স্কুলের পড়ুয়া অরিত্র কর্মকার বলে, ওঁকে আমরা কোন মতেই স্কুল ছেড়ে যেতে দেব না। আমাদের যত্ন করে পড়ান, ভালবাসেন। তাই তাঁর বদলির নোটিশ আসতেই আমরা বিক্ষোভ শুরু করেছি। অভিভাবক হেনা খাতুন বলেন, “এই শিক্ষক নিয়মিত পড়ুয়াদের খোঁজ খবর রাখেন। বাড়ি থেকেও স্কুলে নিয়ে আসেন। পড়ুয়াদের যে কোনও সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। নতুন কেউ এমন হবেন বলে মনে হয় না। তাই আমরা এই শিক্ষককে গ্রামের স্কুল ছেড়ে যেতে দেব না।”
ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, ওই শিক্ষকের স্কুলের প্রতি অবদান ভোলার নয়। অভিভাবকদের বা পড়ুয়াদের দাবি সরকার কিভাবে দেখবে, তা শিক্ষা দফতর বলতে পারে। তবে উনি এই স্কুলে থাকলে এলাকার মানুষের উপকার হবে। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।