দুর্গাপুর দর্পণ, ২১ জুন ২০২৪: প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল নেতাদের বেআইনি মদের ঠেক বন্ধ করে দিয়েছিলেন এক মহিলা। লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে সেই মহিলার স্বামীর ঠিকাদারের কাজ চলে যায়। কাজ ফিরে পাওয়ার দাবি জানালে মহিলাকে তৃণমূল নেতারা রাতে বিছানায় যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। মহিলা রাজি না হওয়ায় শুরু হয় হুমকি দেওয়া। চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি শুক্রবার দুপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। এমন ভয়াবহ অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় শহর দুর্গাপুর।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার নবীন পল্লির ঘটনা। সেখানকার বাসিন্দা রিঙ্কু অঙ্কুর নামের ওই মহিলা সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে রেফার করা হয় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাঁর স্বামী বাপি ইন্দোআমেরিকান মোড়ের একটি বেসরকারি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার ঠিকাদার ছিলেন। তাঁর কাজ চলে যাওয়ায় দুই মেয়েকে নিয়ে বিপাকে পড়ে যান রিঙুক। শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রিঙ্কু এলাকায় সুকুমার বাউরি, বিল্লি এবং বিশু নামের তিন তৃণমূল নেতার অবৈধ মদের কারবারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা অপর্ণা বাউরি দাবি করেন, “গোটা এলাকায় মদ আর জুয়ার ঠেক বাড়ছে। বিল্লি, সুকুমার, বিশু এবং সুনীল নামের তৃণমূলের নেতারা এই অবৈধ কাজের সাথে যুক্ত। সেই মদের দোকান বন্ধ করতেই প্রতিবাদে নেমেছিল আমাদের নিয়ে রিঙ্কু লোকসভা নির্বাচনের আগে। নির্বাচনে জিতে যেতেই এলাকায় মারধর এবং অত্যাচার শুরু করেছে। রিঙ্কুর স্বামীকে ঠিকাদারি কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কাজে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুললে রিঙ্কুকে ওদের সাথে রাত কাটাতে হবে বলে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই কু প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আজ এইভাবে আত্মঘাতীর চেষ্টা করেছে। দুর্গাপুরের ২৩নং ওয়ার্ডের বিদায়ী পুরপিতা দেবব্রত সাঁই বলেন, “একটা ঝামেলা হয়েছিল শুনেছিলাম। দুই পাড়ার মধ্যে মদের দোকান নিয়ে বা অন্য কিছু নিয়ে। আমি উভয়পক্ষকে নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলেও এক পক্ষ আসেননি। তারপর এতকিছু হয়েছে এই জানলাম। পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।