দুর্গাপুর দর্পণ, ২৫ জুন ২০২৪: ‘হিউম্যান রাইটস’ সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদকের পরিচয় দিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরে নাবালিকা পাচার চক্রের ফাঁদ পাতা হয়েছিল! এমনই অভিযোগ পুলিশের। প্রায় আড়াই মাস আগে বসিরহাটের মিনাখাঁ এলাকায় এক নাবালিকা কিশোরী নিখোঁজ হয়। সেই ঘটনার তদন্ত নেমে বসিরহাট পুলিশ আসে দুর্গাপুরে। তারপরেই জানা যায় পুরো ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের নাবালিকাদের ভুল বুঝিয়ে নিয়ে আসা হতো দুর্গাপুরে। এখান থেকে তাদের ভিন রাজ্যে পাচার করা হতো। চক্র চলত দুর্গাপুরের বেনাচিতি সংলগ্ন ধুনরা প্লটের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে। চক্রের মূল অভিযুক্ত সেপকো টাউনশিপের বাসিন্দা রঞ্জন মুখার্জী। মঙ্গলবার বিকালে বেনাচিতির ভাড়াবাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে বসিরহাট পুলিশ। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে আচ্ছা করে উত্তম মধ্যম দিত ছাড়েননি। পুলিশ কোনও রকমে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তাঁর সঙ্গে নাটু গড়াই, প্রবীর দাস নামে আরও দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
( BCREC & Group of institutions । পূর্ব ভারতের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 933927844, 9832131164, 9932245570, 9434250472)
বসিরহাট থানায় নাবালিকা নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরে তদন্ত শুরু করে সেখানকার পুলিশ। তার মধ্যে ওই নাবালিকার বাবাকে ভুয়ো উকিলের পরিচয় দিয়ে নাবালিকার বিয়ের রেজিস্ট্রির জন্য জন্মের শংসাপত্র পাঠাতে বলা হয়। মেয়ের বাবার মনে সন্দেহ হওয়ায় তিনি কিছু পাঠাননি। তার পর থেকে নাবালিকার মোবাইলও বন্ধ হয়ে যায়। বসিরহাট জেলা পুলিশ কয়েকদিন আগে মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে দুর্গাপুরের ধুনরা প্লটের নাম পায়।
বসিরহাট জেলা পুলিশের একটি দল নাবালিকার বাবাকে নিয়ে সোমবার রাতে হাজির হয় দুর্গাপুরে। মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু হয় তল্লাশি। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার বিকেলে ধুনরা প্লটের ওই ভাড়াবাড়িতে দুর্গাপুর থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হানা দেয় বসিরহাট জেলা পুলিশ। ভাড়া বাড়ির ভিতরেই ছিল রঞ্জন মুখার্জী। পুলিশ জানতে যায়, নাবালিকা কোথায় গেল? কোনও উত্তর দেয়নি রঞ্জন। ঘটনা জানাজানি হতেই স্থানীয়রা রঞ্জনের ওপর চড়াও হয়। শুরু হয় গণপিটুনি। পুলিশ কোনও রকমে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। বাড়ির মালিক নাটু গরাই এবং যে বাড়ি খুঁজে দিয়েছিল সেই প্রবীর দাসকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, রঞ্জন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নাবালিকাদের ভুল বুঝিয়ে এই ভাড়া বাড়িতে নিয়ে আসত। এই ভাড়া বাড়ি থেকে ওই নাবালিকাদের ভুল পরামর্শ দিয়ে অন্যদের হাতে তুলে দিত। তারপর ওই নাবালিকাদের বিভিন্ন রাজ্যে পাচার করে দেওয়া হতো। তিনজনকেই বসিরহাটে নিয়ে যায় বসিরহাট জেলা পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে নাবালিকার সন্ধানে তল্লাশি চালানো হবে। পাশাপাশি, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা ধৃতদের জেরা করে তদন্ত চালাবে পুলিশ। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা বলেন, “বসিরহাট জেলা পুলিশে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটরও তদন্ত চলছে।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।