দুর্গাপুরে ডাক্তারি ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার আরও ২, ধুন্ধুমার পরিস্থিতি হাসপাতালে

রণক্ষেত্র হাসপাতাল চত্বর
সুজয় ভট্টাচার্য, দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: শুক্রবার রাতে পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ডাক্তারি ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওড়িশার বাসিন্দা ওই ছাত্রী তাঁর এক সহপাঠী ছাত্রের সঙ্গে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, ফাঁকা রাস্তার পাশের জঙ্গলে তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। নির্যাতিতা হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় বিজড়া ডাঙাপাড়ার শেখ রিয়াজউদ্দিন, ফিরদৌস শেখ এবং বিজড়া বাউড়িপাড়ার অপু বাউড়িকে। রবিবার গ্রেফতার করা হয় নাসিরুদ্দিন শেখ ওরফে সম্রাট এবং সফিক শেখকে। তারাও বিজড়া ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা। সোমবার তাদের দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে ৯ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এদিন দুর্গাপুর আদালতের আইনজীবীরা প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। তাঁরা দোষীদের কঠোর সাজার দাবি তোলেন। মহিলা আইনজীবীরা বছরভর পুজোর সময়ের মতো সিকিউরিটির ব্যবস্থা করার দাবি জানান। তাঁদের বক্তব্য, এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে ভবিষ্যতে, তা সুনিশ্চিত করতে হবে। হাতে প্লাকার্ড নিয়ে মিছিলের সামনে ছিলেন মহিলা আইনজীবীরা। প্রসঙ্গত, দুর্গাপুর আদালতের কোনও আইনজীবী অভিযুক্তদের হয়ে মামলা না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
(BCREC & Group of institutions । পূর্ব ভারতের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 933927844, 9832131164, 9932245570, 9434250472)
এদিন ওই বেসরকারি হাসপাতালে সকাল থেকে বিশাল বিশাল ব্যারিকেড ও বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে কার্যত দুর্গ তৈরি করা হয়েছিল। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এদিন দুর্গাপুরে এলেও হাসপাতালে যাননি। তিনি জানান, নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে কথা বলার জন্য এবং যাঁরা নির্যাতিতাকে চিকিৎসা করছেন সেই সব চিকিৎসকদের সঙ্গে গোপনে দেখা করে কথা বলতে চেয়েছিলেন। বিজেপির কর্মীরা নির্যাতিতার বাবাকে তাঁর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে দিতে পারবেন না বলে জানান। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “পুলিশের চাপ আছে, অন্য চাপও আছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপর।”
এদিন এসইউসিআইয়ের পক্ষ থেকে চিকিৎসক ও সমাজকর্মীদের সংগঠনের তরফে নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলার দাবি জানানো হয়। কিন্তু তাঁদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাঁরা ব্যারিকেডের সামনে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে। একসময় ব্যারিকেড ভেঙে যায়। পরে আবার আরও শক্ত ধাতব ব্যারিকেড এনে সেখানে লাগানো হয়। প্রতিবাদীরা বলেন, “জোর করে এভাবে আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না। বিচার দিতেই হবে।”
এদিন ওড়িশা থেকে এসেছিলেন বিজেপি নেত্রী শিপ্রা বাজপেয়ী। তাঁকে হাসপাতালে ঢুকতে বাধা দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তিনি বলেন, “মেয়েটি কেমন আছে, তার চিকিৎসা কেমন চলছে তা জানতে চাই। ভিতরে মেয়েটির মা একা রয়েছেন। বাবাকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমি মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চাই। কিন্তু আমাকে আটকে দেওয়া হল। চিকিৎসকদের একটি দল এসেছে। তাদেরও আটকে দেওয়া হল। সব দেখে শুনে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি!” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন )