সনাতন গরাই, দুর্গাপুর: রাঢ়বঙ্গে কালীপুজোর চল বরাবরই। কোথাও তন্ত্র মতে কোথাও বৈষ্ণব মতে কোথাও আবার শাস্ত্রমতে পূজিত হন দেবী কালিকা। তেমনই অজয়ের পাড়ে বহু প্রাচীন গ্রাম বাসুদেবপুরে স্বপ্নাদেশ পেয়ে গোচারণভূমিতে শুরু হয়েছিল দক্ষিণা কালীর পুজো। তাই এই কালীর নাম বাথানে কালী। জনশ্রুতি, তালপাতার ছাউনিতেই পুজো হতো মায়ের। কার্তিক অমাবস্যার রাতে এই পুজোয় সামিল হতেন সাধক কবি নীলকন্ঠ মুখোপাধ্যায়। তিনি বেশ কয়েকবার এই মন্দিরে যজ্ঞ করে মায়ের সাধনা করেছেন।
একসময় ইট, কাদার প্রলেপ দিয়ে গড়ে উঠেছিল মন্দির। এলাকাবাসীর ইচ্ছা ছিল দেবীর পাকাপোক্ত মন্দির তৈরি করার। একটু একটু করে অর্থ জমিয়ে মন্দির নির্মাণের জন্য তাঁরা তা মন্দির কমিটিকে দান করেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন পার্শ্ববর্তী এলাকারও বহু মানুষ। গড়ে ওঠে পাকা মন্দির। শুক্রবার মন্দিরের প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে সাজো সাজো রব গ্রামে। সকালে ১০৮ কলসি জল নিয়ে কলস যাত্রার মাধ্যমে শুরু হয় মন্দির প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি। তারপর মহাযজ্ঞ এবং দুপুরে নর নারায়ণ সেবা। সন্ধ্যায় বসবে কীর্তনের আসর। মন্দির প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে চলবে চারদিন ধরে নানা অনুষ্ঠান।
(BCREC & Group of institutions । পূর্ব ভারতের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 933927844, 9832131164, 9932245570, 9434250472)
গ্রামের কূল পুরোহিত নিমাই চন্দ্র রায়ের দাবি, “বাপ ঠাকুরদার মুখে শুনেছি, দেবী খুব জাগ্রত। মায়ের পুজো হয় শাস্ত্র মতে। বংশপরম্পরায় আমরা মায়ের পুজো করে আসছি। প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো এই পুজো। মায়ের কাছে অগাধ আস্থা আর মনের ভক্তি ভরে প্রার্থনা করলে মা মনের বাসনা পূরণ করেন।” মন্দির পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য ইন্দ্রজিৎ ঘোষের কথায়, “আমাদের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিল মায়ের মন্দিরকে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলার। এতদিনে সেটা সম্ভব হল। আজ মায়ের মন্দিরের প্রতিষ্ঠা। গোটা গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়েছে। সূর্য উদয় হতেই বাজনা বাজিয়ে অজয় নদ থেকে কলসিতে করে জল ভরে পার্শ্ববর্তী সব গ্রাম পরিক্রমা করে মায়ের মন্দিরের সামনে শেষ হয়। ১০ হাজার মানুষের নর নারায়ণ সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” গ্রামের যুবক বুদ্ধদেব ঘোষ বলেন, “শুধু গ্রামের মানুষ নয় পার্শ্ববর্তী সব গ্রামের মানুষ আজ মন্দির প্রতিষ্ঠাতে সামিল হয়েছেন। আত্মীয় পরিজন সবাই এসেছেন।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।