দুর্দান্ত সরকারি প্রকল্প! মাসে ৫০০০ টাকা, সঙ্গে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন

মাসে মাসে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ৫০০০ টাকা
দুর্গাপুর দর্পণ ডেস্ক: দুর্দান্ত সরকারি প্রকল্প! মাসে ৫০০০ টাকা, সঙ্গে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পটি ঘোষণা করেছেন। কাজ না থাকলে সর্বাধিক এক বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে আপনার অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে মাসে মাসে ৫০০০ টাকা। অফলাইন, অনলাইন দুই ভাবেই আবেদন করা যাবে। লাগবে নিজের আধার/ ভোটার কার্ড, অথবা মা-বাবার আধার/ ভোটার কার্ড, ব্যাঙ্কের যাবতীয় নথিপত্র এবং ভিন রাজ্যে কাজ করার ডকুমেন্ট। ইতিমধ্যেই প্রায় ২২ লক্ষ ৫০ হাজার জন আবেদন করে ফেলেছেন। তাই আর দেরি করবেন না। কীভাবে এই সুবিধা পাবেন? এই প্রতিবেদনে রইল বিস্তারিত।
প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভিন রাজ্যে যান কাজের আশায়। কিন্তু হঠাৎ পরিস্থিতি যেন বদলে গিয়েছে। বাংলাভাষী হওয়ায় বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে এই রাজ্যের বাঙালিদের। ফলে কাজ করতে গিয়ে চরম আতঙ্কে রয়েছেন অনেকে। তাঁরা বাড়ি ফিরে আসছেন। কিন্তু এখানে তো রুটি রুজির ব্যবস্থা চাই। তা না হলে সংসার চলবে কী করে। ভিন রাজ্য থেকে নিজের রাজ্যে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, ভিন রাজ্যে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজের রাজ্যে ফিরে আসুন। তাঁদের জন্য নতুন প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এবার জেনে নেওয়া যাক, রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে কারা, কীভাবে যুক্ত হতে পারবেন, কী ধরণের সহযোগিতা পাবেন, সরকার কীভাবে সেই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে? জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য যে প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন, সেটি হল ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্প। এই প্রকল্পের সুবিধা ছাড়াও ভিন রাজ্য থেকে যে সমস্ত শ্রমিকরা ফিরে আসছেন, তাঁদের যাতায়াত খরচ বাবদ রাজ্য সরকারের তরফে এই প্রকল্পের অধীনে ৫ হাজার টাকা এককালীন দেওয়া হবে।
(The Mission Hospital. দেশের সেরা চতুর্থ হাসপাতাল এখন দুর্গাপুরে। যোগাযোগ- 8687500500)
শ্রমশ্রী প্রকল্পে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে?
এই প্রকল্পের অধীনে ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকরা প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। যতদিন পর্যন্ত ওই শ্রমিকরা রাজ্যে কোনও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন না, ঠিক ততদিন পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফে ৫ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। তবে এই ভাতা দেওয়া হবে সর্বাধিক এক বছর সময়কাল পর্যন্ত। তার মধ্যেই সরকারের তরফে তাঁদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
কারা শ্রমশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন?
১. প্রথমেই জেনে রাখা দরকার, West Bengal Migrant Workers Welfare Scheme 2023, স্কিমের অন্তর্ভুক্ত শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরে আসলে তাঁরা এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
২. পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে অর্থাৎ শ্রমিকদের নিজের অথবা মা বাবার ভোটার কার্ড, আধার কার্ড পশ্চিমবঙ্গ থেকেই ইস্যু করা হতে হবে।
৩. বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকরা যাঁরা অন্যান্য রাজ্যে হেনস্থার সম্মুখীন হচ্ছেন, তাঁদের জন্যই এই শ্রমশ্রী প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
শ্রমিকরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে কীভাবে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সহযোগিতা পাবেন?
ভিন রাজ্য থেকে এখানে চলে আসার পর যাতে সেই সমস্ত শ্রমিকরা নিজে স্বনির্ভর হতে পারেন বা কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতে পারেন, তাই ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। উদীয়মান স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্প এবং উদীয়মান স্বনির্ভর কর্মসংস্থান যৌথ প্রকল্পের মাধ্যমে এই সহায়তা পাওয়া যাবে। এই সহায়তা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মসংস্থান এক্সচেঞ্জ (Employment Exchange) থেকে পাওয়া একটি নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে আবেদনপত্র, প্রজেক্ট প্ল্যান এবং অন্যান্য নথিপত্র জমা দিতে হবে।
এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে ওই ফর্ম এবং প্রজেক্ট প্ল্যান জমা দেওয়ার পর সেই শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত হবে। স্ক্রীনিং কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এমপ্লয়মেন্ট অফিসার স্থানীয় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে তাঁর জন্য লোনের ব্যবস্থা করবেন। ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইনরিটি ডেভেলপমেন্ট (WBMD) এবং ফিনান্স কর্পোরেশনের (Finance Corporation) মাধ্যমে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত পশ্চিমবঙ্গে চলে আসছেন, তারা সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন। SC, ST এবং OBC ডেভলপমেন্ট এবং ফিন্যান্স কর্পোরেশন এর মাধ্যমে SCP লোন পাওয়ার সুবিধাও পাওয়া যাবে।
এছাড়াও, যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা বাংলায় ফিরে আসবেন, তাদের জন্য উপযুক্ত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজের ব্যবস্থা করা হবে। রাজ্য সরকারের তরফে সেই সমস্ত শ্রমিকদের ট্রেনিং দিয়ে উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের মাধ্যমে তার নিজের বাড়ির কাছাকাছি যে কোনও ট্রেনিং শিবির থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজের ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়ার জন্য সহায়তা করা হবে।
শ্রমশ্রী প্রকল্পে কীভাবে আবেদন করবেন?
শ্রমশ্রী প্রকল্পে অনলাইন এবং অফলাইন দুই ভাবেই আবেদন করা যেতে পারে। অনলাইনে আবেদন করতে হলে www.karmasathips.wblabour.gov.in এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করা যেতে পারে। তবে শ্রমশ্রী প্রকল্পের জন্য পৃথক ওয়েব পোর্টাল তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। শ্রমশ্রী প্রকল্পের টাকা শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠানো হবে। এই টাকা পাওয়ার জন্য যে সমস্ত ডকুমেন্টসগুলো লাগবে সেগুলি হল:
নিজের আধার/ ভোটার কার্ড
অথবা মা-বাবার আধার/ ভোটার কার্ড
ভিন রাজ্যে কাজ করার ডকুমেন্ট
ব্যাঙ্কের যাবতীয় নথিপত্র
যে সমস্ত শ্রমিকেরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন না তাদের জন্য অফলাইনের সুবিধাও রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় রাজ্য সরকার তাদের জন্য এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভূক্ত করার জন্য ক্যাম্প করার কথাও চিন্তা ভাবনা করছে। তবে ইতিমধ্যেই কর্মসাথী পোর্টালে ২২ লক্ষ ৫০ হাজার শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত রয়েছে। এই তালিকার বাইরে যে সমস্ত শ্রমিকেরা রয়েছেন, তাঁদের সবাইকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার।
এই প্রকল্পের অধীনে আরও অতিরিক্ত সুবিধা
রাজ্যে যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফেরত আসবেন, তাঁদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করার ব্যাপারে সহায়তা করা হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ সংক্রান্ত সুবিধা দেওয়া হবে। পাশাপাশি শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য এবং সামাজিক অন্যান্য বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাও যোগ্যতার ভিত্তিতে দেওয়া হবে। তাই এই প্রকল্পের সুবিধা যদি পেতে চান, তাহলে দেরি না করে নাম নথিভূক্ত করে ফেলুন। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।
আগামী ৪ মাসে বাজার কাঁপাতে আসছে ৬টি নতুন ইলেকট্রিক গাড়ি, তালিকায় রয়েছে মারুতি-ও!
