ভিডিও কলে ন*গ্ন ছবিতে আটকে রেখে দুর্গাপুরের ইসিএল কর্মীর ৫৫ হাজার টাকা লুঠ

দুর্গাপুরে সেক্সটর্সনের শিকার ইসিএল কর্মী
দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের এক মাঝবয়সী ইসিএল কর্মীর জীবনে নামল দুঃস্বপ্ন। হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলের ফাঁদে ফেলে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করে প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিয়েছে ৫৫ হাজার টাকা। টাকা না দিলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। সামাজিক সম্মান বাঁচাতে টাকাটা দিতে হলেও পরে সাহস করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ঘটনার তদন্তে নেমেছে দুর্গাপুর সাইবার পুলিশ।
ওই ব্যক্তির বক্তব্য, দিন কয়েক আগে এক তরুণীর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে বন্ধুত্বের অনুরোধ আসে। প্রোফাইল ঘেঁটে দেখে মনে হয়েছিল, সেটি ভদ্র পরিবারের মেয়ে। উপরন্তু তরুণীর বন্ধু তালিকায় নিজের পরিচিত এক বন্ধুর নামও ছিল। তাই বিনা দ্বিধায় অনুরোধ গ্রহণ করেন তিনি। ধীরে ধীরে মেসেঞ্জারে আলাপ বাড়ে। তরুণী জানতে চায়, তিনি কোথায় কাজ করেন, কোথায় থাকেন। পরে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চেয়ে নেয়।
এরপরই রবিবার রাতে ফাঁদ পাতে প্রতারকরা। হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কলে হঠাৎ তরুণী পোশাক খুলে ফেলতে শুরু করে। হতবাক হয়ে যান ওই ব্যক্তি। মুহূর্তেই স্ক্রিনে ভেসে ওঠে এক মহিলার নগ্ন ভিডিও। স্ক্রিন শট ও ভিডিয়ো রেকর্ড করা হয়। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেল— বলা হয়, টাকা না দিলে ভিডিও তাঁর বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ভয় দেখাতে একে একে তাঁর বন্ধুদের প্রোফাইলও দেখানো হয় তাঁকে।
(BCREC & Group of institutions । পূর্ব ভারতের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 933927844, 9832131164, 9932245570, 9434250472)
সামাজিক সম্মান রক্ষার তাগিদে প্রথমে তিনি ১০ হাজার টাকা পাঠান। এরপর প্রতারকদের চাপে পড়ে আরও দুই ধাপে ২৫ হাজার ও ২০ হাজার টাকা মেটান। মোট ৫৫ হাজার টাকা গচ্চা দেওয়ার পরও ফের দাবি ওঠে আরও ৪০ হাজার টাকার। তখনই বুঝতে পারেন, সম্পূর্ণ প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন। তড়িঘড়ি নম্বর ব্লক করে দেন। তবে এখানেই শেষ নয়। পরের দিন অফিসে গিয়ে আবার ফোন আসে।
এবার দাবি করা হয়, দিল্লি সাইবার ক্রাইম থেকে ফোন করা হচ্ছে। বলা হয়, তাঁর আপত্তিকর ভিডিও ইউটিউবে আপলোড হতে চলেছে, তা আটকাতে হলে অবিলম্বে হায়দরাবাদের ইউটিউবের অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। দেওয়া হয় একটি নম্বরও। সেখানে ফোন করলে জানানো হয়, ভিডিও আপলোড আটকাতে হলে ৩১,৫০০ টাকা ফি দিতে হবে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে ফের হুমকি— “দু’ঘন্টার মধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করবে।”
শেষমেশ সাহস সঞ্চয় করে মঙ্গলবার দুর্গাপুর সাইবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ইসিএল কর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, যে বেসরকারি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছিল তা ইতিমধ্যেই ‘সিজ’ করা হয়েছে। গোটা চক্রটিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এই ঘটনায় পুলিশের পরামর্শ— অপরিচিত আইডি থেকে আসা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট বা হোয়াটসঅ্যাপ কলের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। বিপদে পড়লে নির্দ্বিধায় থানায় জানান, তবেই প্রতারক চক্রের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)
