দুর্গাপুর: সম্প্রতি দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে জটিল শারীরিক সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন ৭০ বছর বয়সী এক প্রবীণ। তখন তিনি ভুগছেন চরম অ্যানিমিয়ায়। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা মাত্র ৬। পুরুষদের ক্ষেত্রে যা সাধারণত ১৪ থাকে। সিটি স্ক্যান করা হয়। এছাড়াও অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে ধরা পড়ে, তাঁর ‘ইন্টেস্টিনাল ম্যালরোটেশন’ রয়েছে। সঙ্গে পাকস্থলীর ক্যানসার।
কী এই ‘ইন্টেস্টিনাল ম্যালরোটেশন’? চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, এটি অন্ত্রের জন্মগত শারীরবৃত্তীয় ত্রুটি। ভ্রূণ তৈরি হওয়ার সময়ে পেটের ভিতরের অঙ্গ ঠিক মতো পূর্ণতা না পেলে অন্ত্রে ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে সঠিক কুন্ডলী তৈরি না হয়ে অন্ত্র এমন ভাবে পেঁচানো থাকে যে সেখান দিয়ে খাবার নামার রাস্তা আটকে থাকে, খাদ্যনালি দিয়ে যেতে বাধা পায়। এমন সমস্যা সদ্যজাতদের ক্ষেত্রে মাত্র ০.২ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়। বড়দের ক্ষেত্রে আরও কম।
(The Mission Hospital. দেশের সেরা চতুর্থ হাসপাতাল এখন দুর্গাপুরে। যোগাযোগ- 8687500500)
৭০ বছরের বৃদ্ধের পরিস্থিতি ছিল আরও জটিল। অন্ত্রের সমস্যা তো ছিলই। সঙ্গে ছিল পাকস্থলীর ক্যান্সার (Stomach cancer with midgut malrotation)। ভারতে যা মাত্র ০.০০১ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়। প্রসঙ্গত, পাকস্থলীর ক্যানসারের প্রবণতা প্রতি ১০০০০ জনে মাত্র ৫ জনের থাকে। তাঁকে পরীক্ষা করে দেখা যায়, কোলন ও স্মল ইন্টেস্টাইনের অবস্থান সঠিক নয়। পাকস্থলীতে একটি ক্যান্সারযুক্ত মাস রয়েছে এবং ডুয়োডিনাম প্যানক্রিয়াস কমপ্লেক্স পাকস্থলীর পিছনে ঢাকা পড়ে গিয়েছে।
হাসপাতালের সার্জিকাল অনকোলজি কনসালটেন্ট ডা. অর্ণব চক্রবর্তী বলেন, “আমরা ম্যালরোটেশন ঠিক করতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের নির্দেশিকা মেনে এবং কিছু অতিরিক্ত পদ্ধতির (Ladd band excision) সাহায্যে ক্যান্সার সার্জারি সম্পন্ন করেছি। অস্ত্রোপচারের পরপরই তাঁর হিমোগ্লোবিনের মাত্র ১১.৪ হয়ে যায়। অস্ত্রোপচারের ৫ দিন পরে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রোগী এখন সুস্থ আছেন।” পুরো চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন কনসালটেন্ট রেডিওলজিস্ট ড. অনিকেত মন্ডল। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।