এই রাজ্যে বারে বারে একই ঘটনা ঘটছে, কেউ বিচার পাচ্ছে? প্রশ্ন তুললেন মৃত যুবতীর মা

দুর্গাপুর: পশ্চিমবঙ্গে বারে বারে একই ঘটনা ঘটছে, কেউ বিচার পাচ্ছে? কেউ পাচ্ছে না। জাতীয় সড়কে দুষ্কৃতীদের গাড়ির ধাক্কায় গাড়ি উল্টে মেয়ের মৃত্যুর পর রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মৃত যুবতীর মা। মৃতা যুবতীর নাম সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায় (২৭)। হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা। রবিবার মধ্যরাতে পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) পানাগড়ে গাড়িতে থাকা ওই যুবতীকে প্রথমে দুষ্কৃতীরা কটুক্তি করে। এরপর গাড়ি নিয়ে পিছু ধাওয়া করে যুবতীর গাড়িকে ধাক্কা মেরে উল্টে দেয় দুষ্কৃতীরা। মৃত্যু হয় যুবতীর। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে দেহের ময়না তদন্ত করা হয়।
সুতন্দ্রা একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্মী ছিলেন। জানা গিয়েছে, চন্দননগর থেকে একটি গাড়ি করে চালকসহ পাঁচজন মিলে বিহারের গয়া যাচ্ছিলেন। বুদবুদ এলাকায় ১৯নং জাতীয় সড়কের পাশে একটি পেট্রোল পাম্পে জ্বালানি তেল ভরিয়ে গাড়িটি জাতীয় সড়ক ধরে আসানসোল অভিমুখে যেতে শুরু করে। অভিযোগ, তখন আর একটি সাদা রঙের গাড়ি তাদের গাড়িটির পিছনে ধাওয়া করতে শুরু করে। গাড়িটিতে একাধিকবার ধাক্কা দেয়। শেষ পর্যন্ত তাঁদের গাড়িটিকে ধাক্কা মেরে উল্টে দেয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় যুবতীর।
গাড়ি ফেলে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। এই ঘটনার পর থেকেই নারী নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়ির নম্বর প্লেট মিলিয়ে দেখা গিয়েছে, সেটির মালিক স্থানীয়। মৃত যুবতীর সহকর্মী মিন্টু মন্ডলের অভিযোগ, “আমাদের বিহারের গয়া যাওয়া আসা লেগেই থাকতো। ৮-১০ বছর ধরে যাতায়াত করছি। এই ধরনের ঘটনা ঘটবে তা আমরা ভাবতেও পারিনি। চরম আতঙ্কে আমরা। আজ আমাদের সাথে হল। অন্যদিন অন্য কারওর সাথেও হতে পারে। আমরা শুনেছিলাম জায়গা ভালো নয়। তাই আমরা তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছিলাম। অন্য একটি গাড়ি থেকে গালাগালি করছিল সুতন্দ্রাকে। পরে একাধিকবার ধাক্কা মারে গাড়িটিকে। আমরা জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোড ধরে পালাতে গেলে আবার ধাক্কা মারে। আমাদের গাড়ি উল্টে যায়। মৃত্যু হয় সুতন্দ্রার। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
(BCREC & Group of institutions । পূর্ব ভারতের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 933927844, 9832131164, 9932245570, 9434250472)
মৃতার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে বারবার একই ঘটনা ঘটছে। কেউ কি বিচার পাচ্ছে? কেউ কিছু পাচ্ছে না। পুলিশের গাফিলতি আছে। পুলিশের কোনও নজরদারি ছিল না। এতক্ষণ সময় পেরিয়ে গেল এখনও কাউকে ধরতে পারল না। আমার স্বামী মারা গেছে আট মাস আগে। আমার একমাত্র মেয়ে চলে গেল। বিহার, উড়িষ্যা, ঝাড়খন্ড,মধ্যপ্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্যে যেত আমার মেয়ে। কোথাও কোনওদিন মেয়েকে সমস্যার মুখে পড়তে হয়নি। আমাদের রাজ্যেই নিরাপত্তার অভাবে আমার মেয়ের মৃত্যু হল। মেয়ের কারওর সাথে কোনও শত্রুতা ছিল না। এখন আমি কী নিয়ে বাঁচবো!”
বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি রমন শর্মা কটাক্ষ করে বলেন, “উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটি প্রান্তে নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এখানেও সেই একই ঘটনা ঘটল। দুর্নীতিগ্রস্তদের আখড়া, সন্ত্রাসবাদীদের আঁতুরঘর আর চরিত্রহীনদের দাপট বেড়েই চলেছে পশ্চিমবঙ্গে। আর কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছে না রাজ্যের প্রশাসন।” যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে ঘটনা ঘটেছে তা সত্যিই মর্মান্তিক। পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা আশাবাদী, দ্রুত এই ঘটনার কিনারা হবে। বিরোধীদের শুধুই বিরোধিতা করা কাজ।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।
