স্বাধীনতা যুদ্ধে বিপ্লবী, পরে ট্রাভেল এজেন্ট! বর্ণময় জীবন মলানদিঘীর প্রয়াত প্রফুল্ল কুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের

দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দিয়ে জেল খেটেছেন। জেল থেকে বেরিয়ে কখনও টোলে পড়াশোনা, কখনও অভিনয় করেছেন। কিন্তু ছদ্মবেশে চালিয়ে গিয়েছেন স্বাধীনতার যুদ্ধ। বিপ্লবীদের সঙ্গে নিরন্তর যোগ ছিল তাঁর। অনুশীলন সমিতির সদস্য ছিলেন তিনি। যোগ দিয়েছিলেন গান্ধীজীর সত্যাগ্রহ আন্দোলনে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তাঁকে তাম্র ফলক, পেনশন সহ নানা সরকারি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন।
তিনি পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের মলানদিঘীর প্রয়াত প্রফুল্ল কুমার গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর জীবনী সম্পর্কে আধুনিক প্রজন্ম যাতে জানতে পারে সেজন্য তাঁর ছেলে শ্রীমন্ত গঙ্গোপাধ্যায় একটি বই লিখেছেন। রবিবার প্রকাশিত হল তাঁর আত্মজীবনী। ১৯১৮সালে অবিভক্ত বর্ধমান জেলার কালনা ব্লকের জাবুই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন প্রফুল্ল। ৯ বছর বয়সে বর্ধমান-কালনা রোডের উপর কুচুট এলাকার একটি মাঠে স্বদেশীদের বিক্ষোভে যোগ দেন। আচমকা ব্রিটিশ পুলিশ তাঁদের উপরে চড়াও হয়। প্রতিবাদ করেন নাবালক প্রফুল্ল। তাঁকে গ্রেফতার করে ব্রিটিশ পুলিশ। জুভেনাইল আদালতের বিচারে তিন মাসের জেল হয়।
(BCREC & Group of institutions । পূর্ব ভারতের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 933927844, 9832131164, 9932245570, 9434250472)
জেল থেকে ফিরে পড়াশোনা শিকেয় তুলে দাশরথি তা এর নেতৃত্বে স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আগেই বাবা, মা মারা গিয়েছেন। তাঁর পিসিমা তাঁকে মলানদিঘীর একটি টোলে ভর্তি করে দেন। কাঁকসার জঙ্গলমহলে বিপ্লবীদের হয়ে কাজকর্ম শুরু করে দেন তিনি। বিপ্লবীদের সাথে গোপন চিঠিপত্র, অস্ত্রশস্ত্র আদান প্রদান চলত সেখান থেকেই। খবর পেয়ে জঙ্গলমহলে ব্রিটিশ পুলিশ ধরপাকড় শুরু করে। প্রফুল্লবাবু অন্তর্ধানে চলে যান।
কলকাতায় গিয়ে অভিনয় শুরু করেন। পাশাপাশি ছদ্মবেশে চালাতে থাকেন বৈপ্লবিক কার্যকলাপ। অনুশীলন সমিতির সদস্য পদ নেন তিনি। গান্ধীজীর ‘সত্যাগ্রহ’ আন্দোলনে একাধিকবার যোগ দিয়েছেন। দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দশরথি তা কৃষিমন্ত্রী হন। তখন প্রফুল্লবাবুকে তাম্র ফলক, পেনশন সহ একাধিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সব প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর তিনি ট্রাভেল এজেন্টের কাজ শুরু করেন। ১৯৮৭ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। রবিবার মলানদিঘী ডাকবাংলোয় তাঁর জীবনী সম্বলিত বইয়ের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ঘটল বিদ্বজনদের উপস্থিতিতে। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।
