
সনাতন গড়াই, দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের অন্ডালের উখড়া গ্রামের মহন্ত অস্থল আশ্রম। আশ্রমের জঞ্জাল থেকে উদ্ধার প্রায় সাত শতাব্দী পুরনো দুষ্প্রাপ্য, ঐতিহাসিক সামগ্রী। উদ্ধার হয়েছে সোনার জল দেওয়া ছবি সহ রামায়ণের দুষ্প্রাপ্য পান্ডুলিপি, শের শাহের সাক্ষর ও স্ট্যাম্প দেওয়া জমির দলিল। সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন আশ্রম কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, প্রায় ৭০০ বছর আগে উখড়া গ্রামে গড়ে ওঠে নিম্বাক আশ্রম। এলাকায় যা মহন্ত অস্তল আশ্রম নামে পরিচিত। আশ্রমে রাধা কৃষ্ণের পাশাপাশি অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে। ঝুলন উৎসব ছাড়াও সারা বছর এই আশ্রমে বহু ভক্তের সমাগম ঘটে। সম্প্রতি আশ্রমের আবর্জনা পরিস্কার করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড় আশ্রমিকদের! আশ্রমে সোনার জল দিয়ে আঁকা ছবি সহ রামায়ণের সচিত্র পান্ডুলিপি ছিল। এদিন সেটি উদ্ধার হয় বলে জানান আশ্রমের বর্তমান মহন্ত নারায়ণ শরণদেবজী।
(The Mission Hospital. দেশের সেরা চতুর্থ হাসপাতাল এখন দুর্গাপুরে। যোগাযোগ- 8687500500)
তিনি জানান, উদ্ধার হওয়া পান্ডুলিপিটি অতি প্রাচীন ও দুষ্প্রাপ্য। ভুজ্য পত্রের উপর সংস্কৃত ভাষায় লেখা ১২০০ পাতার সচিত্র এই পান্ডুলিপিটি রামায়ণের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ। ছবিও রয়েছে পান্ডুলিপিটিতে। তবে পান্ডুলিপির লেখক কে তা জানা যায়নি। ছবিগুলোর উপর দেওয়া আছে সোনার জল। গোটা পান্ডুলিপিটি সোনার জরি দিয়ে বাঁধা। পান্ডুলিপিটি ৪০০ থেকে ৪৫০ বছরের পুরনো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে শুধু রামায়ণের পান্ডুলিপি নয়, আরও বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য জিনিস উদ্ধার হয়েছে বলে জানান মহন্ত নারায়ণ শরণদেবজী। অন্যতম হল, আশ্রমকে দান করা সুরি সম্রাট শের শাহের জমির দলিল। প্রায় ৭০০ বছর আগে ভূজ্য পত্রের উপর ঝামানি (চাল পুড়িয়ে তৈরি করা কালি) কালিতে ফরাসি ভাষায় লেখা হয়েছিল দলিলটি। দলিলে রয়েছে শের শাহের আমলের সিলমোহর। আশ্রম সূত্রে জানা গিয়েছে, তৎকালীন শের শাহের অসুস্থ মেয়েকে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুলেছিলেন আশ্রমের তৎকালীন মহন্ত প্রয়াত সবুরাম দেবাচার্যের শিষ্য দয়ারাম শরণ দেবাচার্য্য। কৃতজ্ঞতাবশত সম্রাট শের শাহ তখন আশ্রমকে বেশ কিছু জমি দান করেছিলেন। এটা তারই দলিল বলে জানা গিয়েছে।
(Dvita Eye Care। কলকাতার বাইরে সেরা চোখের হাসপাতাল। যোগাযোগ- 0343-6661111)
এছাড়াও আশ্রমে আবিষ্কৃত হয়েছে মহারানী ভিক্টোরিয়ার লেখা একটি দুষ্প্রাপ্য চিঠি। চিঠিটি পোস্টকার্ডের উপর লেখা। লেখা হয়েছিল ১২৯৮ সালে। সম্প্রতি আশ্রমের আবর্জনা থেকে এই দুষ্প্রাপ্য জিনিসগুলি উদ্ধার হয়েছে। অনাদরে সেগুলির ক্ষতিও হয়েছে। উদ্ধারের পর দুষ্প্রাপ্য জিনিসগুলি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন মহন্ত। তিনি জানান, “রামায়ণের পান্ডুলিপি, শের শাহের জমির দলিল, মহারানী ভিক্টোরিয়ার চিঠি এগুলি বিশেষ তরল (সিলিকা জেল) দিয়ে রাখা হবে।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।
