মিনিবাসে উঠতে দেওয়া হল না বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুকে, দ্রুত পদক্ষেপ নিল প্রশাসন

দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: হোমের ছাত্রকে এবং মাকে মিনিবাসে উঠতে না দেওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। দুঃখপ্রকাশ করল প্রশাসন ও মিনিবাস মালিক সংগঠন। ফের এমন হলে বাস কর্মীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে কড়া বার্তা দিল প্রশাসন। পশ্চিম বর্ধমান (Paschim Bardhaman) জেলার দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের দয়ানন্দ রোড এলাকার একটি বেসরকারি হোমে পড়াশুনা করে পানাগড়ের বিশেষভাবে চাহিদা সম্পন্ন ওই শিশু। সোমবার বাস ধরার জন্য তাকে নিয়ে সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর মা। একটি মিনিবাস তাঁদের দেখে থামে। কিন্তু বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রকে দেখে বাস কর্মীরা বাসে উঠতে দেয়নি বলে অভিযোগ। কোনও রকমে অন্য গাড়িতে করে ছেলেকে নিয়ে দুর্গাপুরের হোমে আসেন মা।
ওই মিনিবাস কর্মীদের এমন অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে সরব হন অনেকে। প্রবীণ সমাজকর্মী রণজিৎ গুহ বিষয়টি মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, মহকুমাশাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখকে জানান। তদন্তে নামে মহকুমা প্রশাসন। মিনিবাস কর্মীদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। বুধবার দুপুরে এআরটিও দেবাশীষ ঘোষ, জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় মিনিবাস মালিক এবং মালিক সংগঠনের কর্মকর্তাদের নিয়ে হোমে যান। ওই শিশু, তার মা এবং হোমের আধিকারিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তাঁরা। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলেও আশ্বস্ত করেন। ফের যদি কোনও মিনিবাসের কর্মী এমন ঘটনা ঘটায়, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
(Dvita Eye Care। কলকাতার বাইরে সেরা চোখের হাসপাতাল। যোগাযোগ- 0343-6661111)
ছাত্রের মা বলেন, “আমাকে এবং আমার ছেলেকে বাসে উঠতে দেওয়া হয়নি। আমার খুব খারাপ লেগেছিল। এসে স্যারদের জানিয়েছিলাম। ওঁরা প্রশাসনকে সবটা জানান। প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে। এই ধরনের ঘটনা আর কোনওদিন কারওর সাথেই ঘটবে না বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।” জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, “এরকম ঘটনা ঘটায় আমরা খুবই দুঃখিত। আগামী দিনে এমন আর হবে না। মন্ত্রী ও মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ গিয়েছিল। তাই আমরা সবাই মিলে এই হোমে এসেছিলাম। ওঁদের আশ্বস্ত করলাম, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না।”
বেসরকারি হোমের সম্পাদক গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “প্রতিদিন দুর্গাপুর, কাঁকসা, পাণ্ডবেশ্বরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক বিশেষভাবে সক্ষম শিশুরা আসে বাসে করে। পানাগড়ের ছাত্র ও তার মাকে বাসে উঠতে দেওয়া হয়নি। আমরা বিষয়টা জানতে পেরেছিলাম। সবার কাছে অভিযোগ করেছিলাম। আজ প্রশাসনের আধিকারিকরা এসেছিলেন। মিনিবাস সংগঠনের কর্মকর্তারাও এসেছিল। সবাই আমাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন।” মিনিবাস প্যাসেঞ্জার ক্যারিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি প্রবীর কুমার চক্রবর্তী বলেন, “আমরা এই ঘটনা জানতে পেরেছি। খুবই বাজে অভিজ্ঞতা হল আমাদের। ওই মহিলার কাছে আমরা সবাই মিলে ক্ষমা চাইলাম। আমরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি, মিনিবাসের কর্মীদের কাছে এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। আইনানুগ কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
(বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন )

