চেনা ছক ভেঙে অভিনব দুর্গা প্রতিমা গড়ে নজর কাড়ছেন দুর্গাপুরের এই শিল্পী

ভিনরাজ্যেও সুনাম কুড়িয়েছেন এই শিল্পী
দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: বছরের পর বছর ধরে নতুন ধরণের প্রতিমা গড়ে চলেছেন পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের এক শিল্পী। দুর্গাপুর শহর তো বটেই, তাঁর প্রতিমা শিল্পাঞ্চলের সীমানা ছাড়িয়ে দিল্লি, নয়ডা, মুম্বাই সহ দেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে তাঁর প্রতিমা। তাঁকে নিয়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি গর্বিত ভিনরাজ্যের পুজো কমিটিগুলিও। শৈশব থেকেই আঁকার নেশা ছিল তাঁর। বড় হয়ে প্রতিমা গড়ার কাজে লেগে পড়েন।
তিনি বাপি বিশ্বাস। দুর্গা প্রতিমা মানেই কাদা, মাটি, খড়, বাঁশ—এমন ধারনা চিরকালীন। কিন্তু সেই চেনা ধারা ভেঙে একের পর এক নতুন ধরণের প্রতিমা তৈরি করে চলেছেন বাপি। তাঁর মূর্তি মাটি দিয়ে নয়, তৈরি হয় কাগজ, পাট, সুতলি বা কাপড়ের মতো পরিবেশ বান্ধব সামগ্রী দিয়ে। প্রথম দিকে খড় দিয়ে প্রতিমা বানিয়ে শহরবাসীকে তাক লাগিয়েছিলেন তিনি। তারপর সুতলি, জুট, কাপড়, এমনকি শুধু কাগজ দিয়েও বানিয়েছেন দুর্গা প্রতিমা। পরিবেশবান্ধব এই সব প্রতিমার ওজন কম, সহজে বহনযোগ্য, দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে না।
(Dvita Eye Care। কলকাতার বাইরে সেরা চোখের হাসপাতাল। যোগাযোগ- 0343-6661111)
এবারের পুজোয় তিনি বানিয়েছেন একেবারে অন্য ধাঁচের এক প্রতিমা। ১২ ফুট উচ্চতার মূর্তি। পুরোপুরি কাগজের তৈরি। পচানো কাগজের মণ্ড, তার সঙ্গে নানা আর্ট পেপার ও রঙের কারুকার্যে গড়া প্রতিমাটি সত্যিই নজরকাড়া। আশ্চর্যের বিষয়, কার্ত্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীসহ সপরিবার দুর্গার ওজন মাত্র ২০ কেজি! বিশাল আকারের মূর্তি, অথচ, ওজনে একেবারে হাল্কা। দুর্গাপুরের এক শপিং মলে এই প্রতিমা এবার শোভা পাবে পুজোর সময়।
আগে তিনি কখনও থার্মোকলের মডেল বানাতেন, কখনও পাট ও কাগজের নানান জিনিস বানাতেন। তবে, পরিবেশ দূষণের কথা ভেবে থার্মোকল ছেড়ে দেন। তারপর থেকেই মাটি ছাড়া প্রতিমা গড়ার পথে হাঁটতে শুরু করেন তিনি। এখন প্রায় প্রতি পুজোতেই এমন এক-দুটি অনন্য প্রতিমা বানান তিনি। তিনি জানান, তাঁর শক্তি তাঁর পরিবার। মা, ৬৫ বছরের অনীমা বিশ্বাস থেকে শুরু করে ভাই টাপু বিশ্বাস, আরও সাতজন সহযোগী—সবাই মিলে প্রতিমা গড়ার কাজে পাশে থাকেন। তিনি বলেন, “মাটি নয়, পরিবেশবান্ধব উপকরণ দিয়েই দেবীকে গড়তে আমি স্বচ্ছন্দ। এতে যেমন দূষণ কমে, তেমন প্রতিমাও হয় হাল্কা। আর শিল্প তো শেষমেশ আনন্দের জন্যই।” দুর্গাপুরের মানুষ গর্ব করে বলেন—“আমাদের শহরে আছেন এমন এক শিল্পী, যিনি প্রতি বছর পরিবেশ বান্ধব প্রতিমা গড়ে ছড়িয়ে দেন পরিবেশ সচেতনতার আলো।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)
