দুর্গাপুরের মাধ্যমিক পাশ যুবকের অভিনব আবিস্কার, নারী সুরক্ষায় বৈদ্যুতিক টিজার গান

মাধ্যমিক পাশ যুবকের উদ্ভাবন ভাইরাল
দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: একদিকে যখন ডাক্তারি পড়ুয়ার উপর নির্যাতনের ঘটনায় রাজ্য জুড়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়েছে, ঠিক সেই সময়ই মহিলাদের আত্মরক্ষার কথা মাথায় রেখে পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের এক যুবক তৈরি করলেন অভিনব একটি যন্ত্র — বৈদ্যুতিক ‘টিজার গান’। কয়েক বছর আগে তিনি তৈরি করেছিলেন ১০ সিটের সৌরবিদ্যুতচালিত বাইক, তার পর প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে চন্দ্রযান-৩ মডেল ও মানববাহী ড্রোন। বিস্কুট দিয়ে তৈরি করেছিলেন অযোধ্যার রামমন্দির ও দীঘার জগন্নাথ ধাম মন্দির — যা ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে এবারে তাঁর সৃষ্টি একেবারেই অন্যরকম — ‘মহিলাদের আত্মরক্ষার জন্য টিজার গান’।
দুর্গাপুরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুবচুরুরিয়া এলাকার বাসিন্দা বছর তিরিশের ছোটন ঘোষ পেশায় ফুলের সাজসজ্জার ব্যবসায়ী। মাধ্যমিকের পরে আর পড়াশোনা করা হয়নি। কিন্তু ছোটন ছোটবেলা থেকেই যান্ত্রিক নানা জিনিসপত্র নিয়ে নিত্য নতুন কিছু বানানোর নেশায় মগ্ন রয়েছেন। তাঁর বাবার গ্যারেজেই শখের বসে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছিলেন। তারপরে তাঁর হাত দিয়ে বেরিয়েছে একের পর এক উদ্ভাবন।
(The Mission Hospital. দেশের সেরা চতুর্থ হাসপাতাল এখন দুর্গাপুরে। যোগাযোগ- 8687500500)
সম্প্রতি দুর্গাপুরের এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ার উপর গণধর্ষণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি মাত্র দু’দিনের মধ্যে বানিয়ে ফেলেছেন এই বৈদ্যুতিক বন্দুক। ছোটনের দাবি, তাঁর তৈরি বন্দুক প্রাণঘাতী নয়। শরীরের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকারকও নয়। এটি মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য হামলাবাজকে অচল করে দিতে পারে। বন্দুকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৪.৫ ভোল্টের লিথিয়াম ব্যাটারি, যা একবার চার্জ দিলে একমাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। বন্দুক থেকে বের হয় প্রায় ৬০০ ইউভি ডিসি ভোল্ট বৈদ্যুতিক শক — যা একফুট দূরের আক্রমণকারীকেও অসাড় করে দিতে সক্ষম।
ছোটনের মতে, “যদি এই বন্দুক বাজারজাত করা যায়, তাহলে অনেক মেয়েরা নিজেদের সুরক্ষা নিজেরাই করতে পারবেন, বিশেষত রাতে বা নির্জন এলাকায়।” তবে বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কিছু সতর্কতাও জানিয়েছেন। ডিজিটাল ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, “ছোটনের এই উদ্ভাবন প্রশংসনীয়, কিন্তু যে কোনও বৈদ্যুতিক অস্ত্র ব্যবহারের আগে আইনি অনুমোদন অত্যন্ত জরুরি। ভারতীয় আইনে আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রও যদি শারীরিক আঘাতের কারণ হতে পারে, তা হলে সেটি নিয়ন্ত্রিত অস্ত্র হিসেবে গণ্য হয়। তাই এমন কোনও যন্ত্র ব্যবহারের আগে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পরামর্শ নেওয়া উচিত। পাশাপাশি, এর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা বৈজ্ঞানিকভাবে পরীক্ষিত হওয়া দরকার।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন )