আসানসোলে সরকারী আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আইনজীবীর মামলায় চরম চাঞ্চল্য

পরিবহন দফতরের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আইনজীবীর মামলা
দুর্গাপুর দর্পণ, আসানসোল: পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) আসানসোলে এক অভূতপূর্ব ঘটনায় পরিবহন দফতরের চার আধিকারিক ও আরও চারজনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিলেন আসানসোল আদালতের এক আইনজীবী। অভিযোগ, বাইরের রাজ্য থেকে আসা গাড়ির ওপর অন্যায্য জরিমানা এবং রশিদ না দেওয়ার মতো গুরুতর অনিয়ম চলছে। আসানসোল আদালতের আইনজীবী বীরেন্দ্র কুমার সিং জানান, আসানসোলের চৌরঙ্গী এলাকায় পরিবহন দফতরের কয়েকজন আধিকারিক নিয়ম বহির্ভূতভাবে গাড়ি আটকাচ্ছেন। অভিযোগ, ট্রাক ওভারলোড না থাকলেও তা ওভারলোড বলে দেখিয়ে হাজার হাজার টাকা জরিমানা দাবি করা হচ্ছে। তার মধ্যে গাড়ি পিছু প্রায় ২,০০০ টাকা নগদে নেওয়া হচ্ছে, অথচ দেওয়া হচ্ছে না কোনও রশিদ।
আইনজীবীর অভিযোগ, ২৯ জুলাই একটি ট্রাক মাঝরাস্তায় দাঁড় করিয়ে ৩০,০০০ টাকা জরিমানা দাবি করেন আধিকারিকরা। চালক টাকা দিতে অস্বীকার করলে জোর করে ২,০০০ টাকা নেওয়া হয়। তারপর ট্রাকটির কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করে সেটি পরিবহন দফতরের পার্কিং-এ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। গাড়ির মালিক যখন দাবি করেন যে গাড়িতে কোনও অতিরিক্ত পণ্য নেই, তখন তিনি বলেন—“যদি সত্যিই ওভারলোডের জন্য জরিমানা করা হয়, তাহলে বাড়তি পণ্য সহ গাড়িটিও ফেরত দিন।” সমাধান না মেলায় মালিক বিষয়টি তাঁর আইনজীবীকে জানান।
(Dvita Eye Care। কলকাতার বাইরে সেরা চোখের হাসপাতাল। যোগাযোগ- 0343-6661111)
আইনজীবী বীরেন্দ্র কুমার সিং ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাঁকেও ধাক্কাধাক্কি ও অশ্রাব্য ভাষায় হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য পরিবহন দফতর, পুলিশ কমিশনারকে লিখিতভাবে জানান। তবে ফল কিছু হয়নি বলে তাঁর দাবি। বৃহস্পতিবার তিনি আসানসোল আদালতে পরিবহন দফতরের চার আধিকারিক ও আরও চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ প্রসঙ্গে আইনজীবীর দাবি—“আমরা বিশ্বাস করি আদালত যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। সেই কারণেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।”
অন্যদিকে, পশ্চিম বর্ধমান জেলার এ.ডি.এম. জেনারেল সুহাসিনী ই জানান—“সরকারকে টাকা দিলে রশিদ দেওয়া হবেই। যদি অভিযোগ ওঠে, তা লিখিত আকারে এলে তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্থানীয় চালকদের অভিযোগ, বাইরের রাজ্যের গাড়ি এলেই ইচ্ছেমতো জরিমানা করা হয়, মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়, গাড়ি পার্কিং-এ আটকে দেওয়া হয় এবং টাকা নিয়ে রশিদও দেওয়া হয় না। দীর্ঘদিন ধরেই এই অভিযোগ থাকলেও কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আইনজীবীর এ মামলা ইতিমধ্যেই শিল্পাঞ্চলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় মানুষ ও গাড়ি মালিকদের প্রশ্ন—“আসানসোলের চৌরঙ্গীতে আসলে কী চলছে? কারা বা কার স্বার্থে এভাবে হয়রানি করা হচ্ছে?” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)
