৪৪ বছর বয়সে ওজন মাত্র ৩৩ কেজি, উত্তরবঙ্গের দিনমজুরের প্রাণ বাঁচাল মিশন হাসপাতাল

দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: উত্তরবঙ্গের মালদহের ৪৪ বছর বয়সী দিনমজুরকে পশ্চিম বর্ধমান (Paschim Bardhaman) জেলার দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে যখন আনা হয়, তখন তাঁর ওজন মাত্র ৩৩ কেজি! গত ৩ বছর ধরে তিনি ভুগছেন হাইপারথাইরয়েডিজমে। কিছু খেলেই বমি হয়ে যায়। এমনকি জল খেলেও এক দশা! দিন দিন ওজন কমছে। নানা হাসপাতালে চিকিৎসার পরে তিনি গিয়েছিলেন হায়দ্রাবাদের একটি নামী প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু চিকিৎসার বিপুল খরচ জোটাতে না পেরে বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন।
এই সময় এক পরিচিতের মাধ্যমে তিনি মিশন হাসপাতালের খোঁজ পান। তাঁকে আনা হয় হাসপাতালে। প্রাথমিক পরীক্ষায় জানা যায়, তাঁর পরিস্থিত অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। ক্রমাগত বমি হচ্চে। থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বিপজ্জনক হারে বেশি। এন্ডোস্কোপি করে দেখা যায়, ডুওডেনাল অংশে একটি কঠিন স্ট্রিকচার (tight stricture at the duodenal site) রয়েছে। কনসালট্যান্ট এন্ডোক্রিনোলজিস্ট (ডিএম এন্ডোক্রিনোলজি) ডাঃ অমর্ত্য চৌধুরী বলেন, “থাইরোটক্সিক সংকটের বিপজ্জনক ঝুঁকি, যা দ্রুত হৃদস্পন্দন, বুক ধড়ফড়, এমনকি কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের-ও কারণ হতে পারে, তাই প্রাথমিকভাবে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখতে হয়।” তিনি জানান, রোগীর থাইরয়েডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে। কয়েক মাসের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো তরল খাবার দেওয়া হয়, যা তিনি গ্রহণ করতে পেরেছিলেন।
(The Mission Hospital. দেশের সেরা চতুর্থ হাসপাতাল এখন দুর্গাপুরে। যোগাযোগ- 8687500500)
এক সপ্তাহ পরে, থাইরয়েডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আসার সাথে সাথে, রোগীকে চূড়ান্ত অস্ত্রোপচারের জন্য পুনরায় ভর্তি করে নেওয়া হয়। সার্জিক্যাল টিম অ্যাসিড নিঃসরণ কমাতে ল্যাপারোস্কোপিক ভ্যাজাল নার্ভ ট্রান্সেকশন (laparoscopic vagal nerve transection) করে। পাশাপাশি, খাদ্য চলাচল সচল রাখার জন্য বাইপাস পদ্ধতির (gastrojejunostomy) সাহায্য নেওয়া হয়। ইন্ট্রাঅপারেটিভ ফ্রোজেন সেকশন বায়োপসি করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে নার্ভ ট্রান্সেকশন সফল হয়েছে।
তবে, অস্ত্রোপচারের পরে রোগীর তীব্র অ্যাসিডোসিস হয়। সেজন্য তাঁর আইসিইউতে ভেন্টিলেটরি সাপোর্টের প্রয়োজন হয়। কনসালট্যান্ট গ্যাস্ট্রোসার্জন এবং হেপাটোবিলিয়ারি-প্যানক্রিয়াটিক সার্জন (এমএস জেনারেল সার্জারি, এমসিএইচ সার্জিক্যাল গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি এবং এইচপিবি সার্জারি, এইমস) ডাঃ বিজিত সাহা বলেন, “পরবর্তী ২৪ ঘন্টা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং যত্নের মাধ্যমে, পরের দিন তাঁকে আমরা স্থিতিশীল করে তুলতে সক্ষম হই। করতে এবং ভেন্টিলেটরি সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়।” দিন কয়েকের মধ্যে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন )

