স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রাজমিস্ত্রীর মেরুদন্ডের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার করিয়ে সুস্থ করে তুলল মিশন হাসপাতাল

দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর: দুটি হাত, দুটি পা সম্পূর্ণ ভাবে বিকল হয়ে গিয়েছে। নড়াচড়ার ক্ষমতাও হারিয়েছেন। পেশায় রাজমিস্ত্রী, বছর ৩০ এর ওই যুবককে যখন পশ্চিম বর্ধমান (Paschim Bardhaman) জেলার দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে আনা হয়, তার ৫ বছর আগে থেকে তিনি ভুগছেন। শেষ তিন মাস ধরে একেবারেই শয্যাশায়ী। মূত্রাশয় ও অন্ত্রে-ও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন। কার্যত প্রাণ সংশয় দেখা দিয়েছিল তাঁর।
জানা গিয়েছে, প্রথমে শুরু হয়েছিল একটি হাত দিয়ে। ধীরে ধীরে দ্বিতীয় হাত এবং পা-দুটিও বিকল হয়ে যায়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে ছুটে গিয়েছেন তিনি। কাজ না হওয়ায় যান ব্যাঙ্গালুরুতে। প্রচুর খরচ শুনে পিছিয়ে আসেন। এসব করতে গিয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হয়েছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। ততদিনে, স্পাইনাল কর্ড (মেরুদন্ড) নষ্ট হতে শুরু করেছে। প্রাণ সংশয় দেখা দেয় ওই যুবকের।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় তাঁকে মিশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষার পরে দেখা যায়, তাঁর সার্ভিকাল স্পাইনে একটি বড় ইন্ট্রা-ড্যুরাল এবং এক্সট্রা মেডুলারি টিউমার রয়েছে, যা তিনটি স্পাইনাল সেগমেন্টে বিস্তৃত। টিউমার অনেক বড় হয়ে গিয়েছিল এবং স্পাইনাল কর্ডকে মারাত্মকভাবে সংকুচিত করে নষ্ট করে দিচ্ছিল। ফলে অস্ত্রোপচারের বিষয়টি ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং! তাছাড়া, টিউমার এবং স্বাভাবিক টিস্যুর মধ্যের যে সীমানা প্রাচীর, সেটাও আর স্পষ্ট ছিল না। অর্থাৎ, স্বাভাবিক টিস্যুরও ক্ষতির চরম আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল।
(The Mission Hospital. দেশের সেরা চতুর্থ হাসপাতাল এখন দুর্গাপুরে। যোগাযোগ- 8687500500)
ডিএনবি (নিউরোসার্জারি) সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সত্যজিৎ দাস জানান, পিছনের দিক থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার করে টিউমারটিকে বের করা হয়। টিউমারটিকে চারপাশের স্বাভাবিক স্নায়বিক কাঠামো থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে অস্ত্রোপচারের সময় নিউরোসার্জিক্যাল মাইক্রোস্কোপের নীচে মাইক্রোসার্জিক্যাল টেকনিক ব্যবহার করা হয়। এর ফলে নিঁখুত সাফল্য মেলে।
অস্ত্রোপচারের পর, হাসপাতালের সর্বক্ষণের আন্তরিক নার্সিং কেয়ার, ফিজিওথেরাপির সাহায্যে দ্রুত তাঁর আরোগ্য লাভ হতে থাকে। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। ধীরে ধীরে অঙ্গগুলিতে শক্তি ফিরে পাচ্ছেন। ডা. সত্যজিৎ দাস জানান, শুরুর দিকে আনলে, যখন তিনি হাঁটাচলা করতে পারছিলেন, তখন অস্ত্রোপচার করতে পারলে দ্রুত তিনি সুস্থ হয়ে যেতেন। যেহেতু অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে, তাই এখন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে একটু বেশি সময় লাগবে। তিনি বলেন, “আশা করি, কয়েক মাসের মধ্যে তিনি স্বাভাবিক সুস্থ জীবন যাপন করতে সমর্থ হবেন। আসলে, স্নায়ু রোগের ক্ষেত্রে সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই, যত দ্রুত সম্ভব সঠিক চিকিৎসা করানো দরকার।” ( বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন )

