প্রথম বারের মতো Pediatric Corneal Transplant করা হল দুর্গাপুরের Dvita Eye Care-এ
দুর্গাপুর দর্পণ, ৩০ মে ২০২৪: কলকাতার বাইরে দক্ষিণবঙ্গ ও সংলগ্ন অঞ্চলে প্রথমবারের মতো Pediatric Corneal Transplant করা হল পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের Dvita Eye Care-এ। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেল দুর্গাপুরের আমরাইয়ের সুকান্ত হাজরা।
জন্মগত জটিল চোখের রোগে ভুগছিল সুকান্ত। এর আগে তার ডান চোখে আগে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্ত তা কার্যকরী হয়নি। এদিকে বাঁ চোখেও দৃষ্টিশক্তি দিন দিন কমছিল। শেষ পর্যন্ত ১৬ এপ্রিল তাঁকে নিয়ে পরিজনেরা যান Dvita Eye Care-এ। রোগীর দুই চোখ পরীক্ষা করেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ অমিত কুমার দাস। তিনি জানান, সুকান্ত ডান চোখে একেবারেই দেখতে পাচ্ছিল না। কর্নিয়া প্রতিস্থাপন হলেও গ্রাফট ফেলিওর হওয়ায় কর্নিয়া সাদা হয়ে গিয়েছিল। বাঁ চোখে দৃষ্টিশক্তি ছিল সামান্য (৬/৬০)। বিভিন্ন রকম পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হয়।
(Dvita Eye Care। কলকাতার বাইরে সেরা চোখের হাসপাতাল। যোগাযোগ- 0343-6661111)
বাঁ চোখ পরীক্ষায় জানা যায়, সুকান্ত জন্মগত ‘কনজেনিটাল হেরিডিটারি এন্ডোথেলিয়াল ডিস্ট্রোফি’র (CHED) শিকার। প্রসঙ্গত, চোখের সামনের স্বচ্ছ অংশকে বলে কর্নিয়া বা মণি। কর্নিয়ার মধ্য দিয়ে চোখের মধ্যে আলোকরশ্মি প্রবেশ করে ও রেটিনাতে কেন্দ্রীভূত হয়। আঘাত বা অসুস্থতার কারণে কর্নিয়া অস্বচ্ছ হয়ে গেলে মানুষের মধ্যে দৃষ্টিহীনতা দেখা যায়। ‘কনজেনিটাল হেরিডিটারি এন্ডোথেলিয়াল ডিস্ট্রোফি’র ক্ষেত্রে জন্মগতভাবে কর্ণিয়ার ভিতরের কোষগুলি খারাপ হয়ে যায়। কর্ণিয়ায় জল ঢুকে ফুলে ওঠে। ফলে সেটা অস্বচ্ছ হয়ে ঘসা কাচের মতো হয়ে যায়। এক মাত্র কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের মাধ্যমেই দৃষ্টিশক্তি ফেরানো সম্ভব হয়।
শুরু হয় উপযুক্ত কর্ণিয়ার খোঁজ। খোঁজ পেতেই রোগীর পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ১৭ মে সুকান্তর চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়। ১৮ মে তাকে প্রথমবার পরীক্ষা করেন চিকিৎসক। সুকান্ত জানায়, অল্প অল্প দেখতে পাচ্ছে। তবে ২৭ মে দ্বিতীয়বার যখন তাকে চেক আপের জন্য হাসপাতালে আনা হয়, তখন সে জানায় দৃষ্টিশক্তির অনেক উন্নতি হয়েছে। তুলনামূলক ভাবে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে। চিকিৎসক জানান, ডান চোখে দ্বিতীয়বারের জন্য অস্ত্রোপচার করানো খুব ঝুঁকির। সুকান্তর পিসি জানান, আগে এই হাসপাতাল নিয়ে কোনও তাঁদের অভিজ্ঞতা ছিল না। সুকান্ত দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ায় হাসপাতালের প্রশংসা করেন তিনি। ডাঃ অমিত কুমার দাস বলেন, “ডান চোখে দ্বিতীয়বারের জন্য কর্নিয়া প্রতিস্থাপন খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। চোখে যে সেলাই আছে তা এক বছর পরে বের করতে হবে। ধাপে ধাপে দৃষ্টিশক্তির আরও উন্নতি হবে।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।