এরপর থেকে সে মুস্তাকের স্ত্রীর সঙ্গে থাকত। তাকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করানো হত। বিভিন্ন হোটেলে গিয়ে এসকর্ট সার্ভিস দিতে হত তাকে।
—————————————–
দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩: গত ২৮ আগস্ট পশ্চিম বর্ধমান (Paschim Bardhaman) জেলার দুর্গাপুরের যৌন পল্লি কাদা রোড এলাকা থেকে এক বাংলাদেশি নাবালিকাকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় পাপ্পু রজক, শেখ মুস্তাক ও সাহিনুর বিবি নামে তিন জনকে। বৃহস্পতিবার রাতে দুর্গাপুরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টার থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে এই চক্রের মূল পান্ডা লালু হোসেন শাহকে।
জানা গিয়েছে, নাবালিকা উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া তিন জনের মধ্যে মুস্তাক আহমেদকে গ্রেফতার করা হয় পানাগড়ে ডাঙাপাড়ায় ভাড়া বাড়ি থেকে। মুস্তাক ও তাঁর স্ত্রী সাহিনুর বিবি ডাঙাপাড়ার ওই ভাড়া বাড়িতে নাবালিকাকে রাখার ব্যবস্থা করেছিল। নাবালিকাকে পাড়ায় নিজের বোন বলে পরিচয় দিত মুস্তাকের স্ত্রী। তবে তাকে এলাকার কারও সঙ্গে মিশতে দেওয়া হত না।
পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে মুস্তাক দাবি করে, ওই বাংলাদেশি নাবালিকাকে ভালোবেসে বিয়ে করে এই রাজ্যে নিয়ে এসেছে সে। তাঁদের এক সন্তানও রয়েছে। কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বাংলাদেশের দুই দালাল ওই নাবালিকাকে ভুবনেশ্বরের এক নারী পাচারকারীর হাতে তুলে দেয়। নাবালিকাকে নিয়ে আসা হয় দুর্গাপুরের একটি বিউটি পার্লারে। তখন থেকে সে মুস্তাকের স্ত্রীর সঙ্গে থাকত। তাকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করানো হত। বিভিন্ন হোটেলে গিয়ে এসকর্ট সার্ভিস দিতে হত তাকে।
পুলিশ জানতে পারে, মুস্তাক ২৮ আগস্ট দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি মোড়ে ওই বাংলাদেশি নাবালিকাকে গাড়িতে করে পৌঁছে দেয়। সেখান থেকে পাপ্পু রজক তাকে যৌনপল্লিতে মুস্তাকের স্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেয়। নাবালিকা সেখানে পৌঁছে আশপাশ ঘুরে দেখছিল। তখন স্থানীয় যৌন কর্মীদের সন্দেহ হওয়ায় থানায় খবর দেন তাঁরা। এরপরেই পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। একে একে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন- দুর্গাপুর শহরে বিশাল ধস
মুস্তাক ও তার স্ত্রীর মোবাইল ফোন থেকে আসানসোল ও দুর্গাপুরের প্রায় ২০টি হোটেলের নাম পেয়েছে। সেই সব হোটেলে ওই নাবালিকাকে সার্ভিস দিতে হত বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। চক্রের মূল পান্ডা কে তা খুঁজে বের করে তাকে গ্রেফতারের পরিকল্পনা করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার চক্রের মূল পান্ডা লালু হোসেন শাহকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার তাকে পুলিশি হেফাজত চেয়ে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলে পুলিশ। এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।