খাজা আনোয়ার বেড় (নবাব বাড়ি), বর্ধমানের ঐতিহাসিক পর্যটন ক্ষেত্র

WhatsApp Group Join Now
Instagram Group Join Now

দুর্গাপুর দর্পণ ডেস্ক, ২০ জুলাই ২০২৩: খাজা আনোয়ার বেড় বা নবাব বাড়ি (Mausoleum of Khwaja Anwar /Nawab Bari) বর্ধমান শহরের দক্ষিণে অবস্থিত। প্রায় তিনশো বছরের পুরানো ঐতিহাসিক স্থাপত্য। ইতিহাস অনুরাগীরা অনেকেই বছরের বিভিন্ন সময়ে এই স্থাপত্য পরিদর্শনে আসেন। প্রতি বছর পয়লা মাঘ মেলা বসে। জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হয়।

জানা যায়, দিল্লির সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যু হয় ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে। চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে আওরঙ্গজেব পুত্র মুয়াজ্জেম
প্রথম শাহ আলম বাহাদুর শাহ উপাধি নিয়ে সিংহাসনে বসেন। মাত্র ছ’বছর রাজত্ব করেছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর
সঙ্গে সঙ্গে আবার শুরু হয় রক্তক্ষয়ী ভ্রাতৃবিরোধ। জ্যেষ্ঠ পুত্র আজিম-উস-শান সিংহাসনে বসেন। এক বছরের
মধ্যে তিনিও ভাই জাহাঙ্গির শাহের চক্রান্তে নিহত হন। আজিম-উস-শানের পুত্র ফারুখ শিয়ার জাহাঙ্গির শাহকে
হত্যা করে পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেন।

দিল্লির এই ভ্রাতৃঘাতী গৃহবিবাদে দেশ জুড়ে গোলযোগ তাঁর আঁচ এসে লাগে বাংলার বর্ধমানেও। এখানে পাঠান
সর্দারদের প্রধান রহিম খান মুঘলদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলে ফারুখ শিয়ার বিদ্রোহ দমনে দুই বিশ্বস্ত
সেনাপতি খাজা সৈয়দ আনোয়ার ও খাজা আবুল কাসেমকে পাঠান। শহরের দক্ষিণ দামোদর এলাকায় শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ।
রহিম খান সন্ধি প্রস্তাব পাঠালে যুদ্ধ থামে। কিন্তু রহিম এই সুযোগে হত্যা করেন দুই মোঘল সেনাপতিকেই।

বিশ্বাসঘাতকতার শিকার দুই সেনাপতিকে শহিদ আখ্যা দেওয়া হয়। ফারুখ শিয়ারের নির্দেশে বর্ধমান শহরের বেড়
এলাকায় প্রায় ১০ বিঘা জমির উপরে লক্ষাধিক স্বর্ণমুদ্রা ব্যয়ে নির্মিত হয় স্মৃতিসৌধ। দুই সেনাপতির বংশধরদের
‘নবাব’ আখ্যা দিয়ে তাঁদের জন্য তৈরি হয় রাজকীয় প্রাসাদ, মকবরা, বাঁধানো সরোবর, ফুলবাগান। মুঘল
স্থাপত্যরীতির সঙ্গে ইন্দো-সিরীয় আঙ্গিক ও মিনার শৈলীর সঙ্গে বাংলার দোচালা মন্দিরের স্থাপত্য মিশিয়ে গড়ে
উঠেছে সৌধ। (কৃতজ্ঞতা- পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন) (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!