দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর, ১৪ জানুয়ারি ২০২৪: পশ্চিম বর্ধমান জেলার (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের কাঁকসার রেলপাড়ে এলাকায় গত ১০ নভেম্বর ঘটেছিল ভয়াবহ এক ঘটনা। একটি বাড়িতে তিনজনকে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন করা হয়েছিল। সেই খুনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার ধৃতদের সেখানে নিয়ে গিয়ে খুনের ঘটনার পুনর্নিমাণ করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, গলায় লাফদড়ি পেঁচিয়ে খুন করা হয় তিনজনকে। তথ্য লোপাট করতে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয় মোবাইলের সিম কার্ড ও লাফদড়ি। কাঁকসার খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। সিম কার্ড ও লাফদড়ি উদ্ধারের জন্য পুকুরের জল পাম্প দিয়ে তুলে ফেলার কাজ শুরু হয়।
পুকুরের জল প্রায় সব তুলে ফেলার পরে কচু বন পরিস্কার করার কাজ শুরু হয়। রাত হয়ে যাবার জন্য কাজ বন্ধ হয়ে যায়। রবিবার সকাল থেকে পুনরায় কাজ শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত দুপুর বারোটা নাগাদ উদ্ধার হয় লাফ দড়ি এবং সিমরনের মোবাইল। এর ফলে তদন্ত কাজ অনেকখানি এগিয়ে গেল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ১০ নভেম্বর রেলপাড়ে খুন হয় কিশোরী সিমরন বিশ্বকর্মা ও তার দিদিমা সীতা দেবী এবং মামার ছেলে সোনু বিশ্বকর্মা। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথম গ্রেফতার করে সিমরনের কাকিমা রিঙ্কি বিশ্বকর্মাকে। তাকে জেরা করে গ্রেফতার করা হয় দুই যুবক রাজবাঁধের মহম্মদ জুনেদ এবং পাশের বাড়ির প্রসেনজিৎ বিশ্বকর্মাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের জেরা করে জানা যায়, কাকিমার বিবাহ বহির্ভূত একাধিক সম্পর্ক সিমরন জেনে যাওয়ায় এবং আপত্তিকর ছবি পরিবারের সবার কাছে প্রকাশ করে দেওয়ায় সিমরনের উপর রাগে ফেটে পড়ে কাকিমা।
সিমরনের বাবা-মা আসাম গিয়েছিলেন। সেই সুযোগে খুন করা হয় তিনজনকে। অভিযোগ, সেদিন সিমরনের কাকিমা ও প্রসেনজিৎ সিমরনদের বাড়িতে যায়। সিমরনের একটি লাফ দড়ি ছিল। প্রসেনজিৎ ঘরে ঢুকে সেই লাফ দড়ি গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে সিমরনকে। একই ভাবে খুন করা হয় সীতা দেবীকেও। বাড়ির দুটি কুকুরকে নিয়ে বাইরে গিয়েছিল সনু। সে ফিরতেই তাকেও একই ভাবে খুন করা হয়। সেই সময় বাইরে পাহারায় ছিল কাকিমা।
খুনের পরে সিমরনের মোবাইলে থাকা কাকিমার পরকীয়া সম্পর্কের আপত্তিকর ছবি ও তথ্য লোপাট করতে পাশের পুকুরে ফেলে দেওয়া হয় সিমরনের মোবাইল, সিম কার্ড এবং লাফ দড়িটি। ঘটনার কথা জানাজানি হতে কাকিমা কান্নার নাটক করে সবাইকে জানাতে থাকে, হেলমেট পড়ে এক যুবক ওই বাড়িতে ঢুকেছিল। সে খুন করে পালিয়েছে। কিন্তু তা যে মিথ্যা, যত সময় যাচ্ছে তত তা নিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।