Eid Milad-Un-Nabi : সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়ল পশ্চিম বর্ধমান জেলার পানাগড়। সৌজন্যে সেখানকার শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘সবাই মিলে মিশে থাকার মধ্যেই বেঁচে থাকার আসল আনন্দ।’’
—————————————
দুর্গাপুর দর্পণ, পানাগড়, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩: বিশ্ব নবী দিবসে সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়ল পশ্চিম বর্ধমান (Paschim Bardhaman) জেলার পানাগড়। সৌজন্যে সেখানকার শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন। সাম্প্রদায়িক হানাহানির খবর মাঝে মাঝেই উদ্বেলিত করে আমাদের। কিন্তু বৃহস্পতিবার পানাগড়ে দেখা গেল উল্টো ছবি।এদিন পালিত হচ্ছে ইদ-মিলাদ-উন-নবী। কেউ কেউ বলে থাকেন, ইদে মিলাদুন্নবি বা মাওলিদ। এটি হজরত মহম্মদের জন্মদিন। বিশ্বাস করা হয়ে থাকে, এই দিনেই মহান নবীর আগমন ঘটেছিল। সেই খুশিতেই পালিত হয় ইদ-মিলাদ-উন-নবী দিনটি। ইদের অর্থ, খুশি হওয়া, ফিরে আসা, আনন্দ উদযাপন।
সেই সময় বিশ্বজুড়ে অশান্তি আর যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। সেই অস্থির পরিস্থিতিতে শান্তির বার্তবাহক হয়ে জন্ম নেন আল্লাহ’র দূত মহানবী। ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের বিশ্বাস, শান্তি স্থাপন করে মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথ প্রদর্শণ করার উদ্দেশ্যেই তাঁর জন্ম হয়েছিল। বিশ্বে শান্তির বাতাবরণ তৈরি করেন তিনি। তাই তাঁর আগমনের দিন উদযাপনের জন্য পালিত হয় ইদ-মিলাদ-উন-নবী।
অনেকে আবার এই দিনটিকে মহান নবীর মৃত্যুবার্ষিকী বলেও মনে করেন। তাঁরা দেখেন শোকপ্রকাশের দিন হিসেবে। শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মুসলিমরা এই উৎসব পালন করেন। শিয়া মুসলিমরা রবিউল-আউয়াল মাসের ১৭ তারিখ এবং সুন্নি মুসলিমরা রবিউল-আউয়াল মাসের ১২ তারিখ এই উৎসব উদযাপন করেন। চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করেই পালিত হয় এই উৎসব।
অন্যদিকে, সালাফি ও ওয়াহাবি মুসলিমদের মতে এমন কোনও উৎসবের স্থান নেই তাঁদের ধর্মে। তাঁদের বিশ্বাস, এই দিনটি মহান নবী নিজেও পালন করতেন না। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, সৌদি আরব, ইরান, তুরস্ক সহ নানা দেশে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা এই উৎসব পালন করে থাকেন। এই দিন মসজিদে গিয়ে তাঁরা নামাজ পড়েন। বাড়ি ঘর আলো দিয়ে সাজানো হয়। রান্না করা হয় নানা ধরণের খাবার। অতিথিরা আসেন। কেউ কেউ এদিন দুঃস্থদের হাতে খাবার, বস্ত্র উপহার তুলে দেন।
পানাগড়েও দিনটি যথোচিত মর্যাদা সহকারে পালন করছেন মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা। বৃহস্পতিবার সেই উৎসব ঘিরে দেখা গেল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির। বস্তুত, এর আগেও এমন সম্প্রীতির নজির বার বার রেখেছে এই জনপদ। এদিন দেখা গেল, বিশ্ব নবী দিবস উপলক্ষে কাঁকসার দান বাবা মাজার থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। পাঠানপাড়া পর্যন্ত যায় শোভাযাত্রা। পথে গুরুদোয়ারার তরফে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের জল, চা, বিস্কুট খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘সবাই মিলে মিশে থাকার মধ্যেই বেঁচে থাকার আসল আনন্দ।’’ (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।
আরও পড়ুন- জয়া-বিজয়াকে সঙ্গে নিয়েই চারশো বছর ধরে ঘটক বাড়িতে আসছেন দেবী দুর্গা