ভাবের ঘরে চুরি! স্বামীজী বলছেন, ধর্ম হচ্ছে মানুষের ভিতর যে ব্রহ্মত্ব প্রথম থেকেই বিদ্যমান, তারই প্রকাশ। আমাদের ভিতরে কতকগুলি প্রবৃত্তি আছে, সেগুলি ইন্দ্রিয়ের মধ্যদিয়ে বাহিরে প্রকাশিত হবার চেষ্টা করছে। আমাদের মনের একটি প্রবৃত্তি বলে- ‘এই কাজ কর’ আর একটি বলে- এটা কোরো না। প্রবৃত্তি আমাদের সকলের কর্মের মূল। আর নিবৃত্তি থেকেই ধর্মের উদ্ভব।
যতদিন না ধর্ম অনুভূত হচ্ছে ততদিন ধর্মের কথা বলাই বৃথা। ভগবানের নামে এত গণ্ডগোল, বাদানুবাদ কেন? কারণ সাধারণ মানুষ ধর্মের মূল উৎসে যায়নি। ধর্মলাভ করতে হলে ভাবের ঘরে চুরি ছাড়তে হবে। প্রথমে চাই মনুষ্যত্ব, মানুষ জন্মতেই মুক্তিলাভের সুবিধা। তারপর চাই মুমুক্ষতা-মোক্ষের জন্য এই সুখ-দুঃখের বাহিরে যাবার প্রবল আগ্ৰহ, এই সংসারের প্রতি বিতৃষ্ণা।
যখন ভগবানের জন্য তীব্র ব্যাকুলতা হবে তখনই ঈশ্বরলাভের অধিকারী হওয়া যাবে। বিষয়ানন্দ ও ব্রহ্মানন্দ দুই-ই কখনো একসঙ্গে অবস্থান করতে পারে না। কামকাঞ্চনের আসক্তি না গেলে ঈশ্বরে মন যায় না, তা গৃহীই হোক বা সন্ন্যাসীই হোক। এই দুই বস্তুতে যতক্ষণ মন থাকবে ততক্ষণ ঈশ্বরে অনুরাগ আসবে না। ধর্ম অনুরাগে, বাহ্য অনুষ্ঠানে নয়। (সংকলক: সন্দীপ সিনহা)