অবতার লীলা: অবতার লীলা মানেই তো জগৎকে নিয়ে কানামাছি খেলা। যাঁকে স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণ ভগবতীজ্ঞানে পূজা করলেন, তাঁকেও ছেড়ে কথা কয় না। আড়ালে সমালোচনা চলে! কাকেই বা কি বলতে ছেড়েছে লোকে? রামচন্দ্রকে বলেনি স্ত্রৈণ? কৃষ্ণকে বলেনি চোর? শ্রীরামকৃষ্ণকে বলেনি পাগল?
বাঁধাচোখে অন্ধের হস্তিদর্শন আর কি! কেউ বলে হাতিটা থামের মতো, কেউ বলে আমি দেখেছি দড়ির মতো! আসলে ঐ রকম বুঝিয়েই রাখা! বেশি বুঝতে দিলে খেলা জমবে কেমন করে? যারা মন দিয়ে দেখতে জানে, তারাই জানে হাতি থামও নয়, দড়িও নয়, জানে সম্পূর্ণ হাতি কি জিনিস। যারা দেখেছে তারাও তো যে সে নয়। তারাও যে অবতরণ করেছে অবতারের সঙ্গে। কেউ আগে কেউ পিছে।
মা বলেন—তোমাদের ভাবনা কিসের, ঠাকুর তোমাদের সঙ্গে আছেন। তারা বলে—মা, কেবল ঠাকুরের দোহাই দিয়ে নিজেকে আড়াল করতে চাও? তোমাকেও চিনে ফেলেছি আমরা। শ্রীরামকৃষ্ণ রহস্য করে শ্রীমা সম্পর্কে বলতেন: ছাইচাপা বেড়াল। বেড়াল ছাইয়ের গাদায় শুয়ে থাকলে যেমন তার গায়ের রঙ সঠিক কেউ বুঝতে পারে না, তেমনি সংসারে আর পাঁচজনের মধ্যে শ্রীমা এমনভাবে সাধারণের মতো থাকতেন যে, তাঁর স্বরূপ সাধারণের অজ্ঞাত ছিল। আসলে তিনিই জগজ্জননী।—(সংকলক: সন্দীপ সিনহা)