অমৃত বচন: গীতার বাণী স্বাধীনতার বাণী। গীতা আমাদের আত্মসচেতন করে তুলতে চায়, মুক্ত মানুষ হিসাবে দেখতে চায়। শিক্ষক জীবিকার সন্ধান দেন, গুরু দেন জীবনের সন্ধান। এতো স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেও যে আমাদের সমস্যা মিটছে না, তার কারণ এখানে শুধু টাকা উপার্জনের শিক্ষা দেওয়া হয়। এখানে আত্মপরিচয় ঘটানো হয় না, দেওয়া হয় নানারকম মুখোশ পরার শিক্ষা। এই শিক্ষায় আরও বড় বৃত্তের অধিকারী হয় মানুষ, কিন্তু কেন্দ্রের খোঁজ পায় না।
উপনিষদের ঋষিরা বলেছিলেন, আত্মানম্ বিদ্ধি, নিজেকে জানো, আমরা এটাই এড়িয়ে যাচ্ছি, সংকট এখানেই। আধুনিক সভ্যতা নিত্যনতুন ভোগের সামগ্রী তৈরি করে জীবনকে সুখী করতে চাইছে, যা কখনও সম্ভব নয়। ভোগ্যবস্তু যতই ব্যক্তির অধিকারে আসুক সে মনে করবে এটাই যথেষ্ট নয়, আরও চাই। যেটা পাবে না তার জন্য মনে অতৃপ্তি জেগে উঠবে।
আজ যে ভোগ্যবস্তুতে আনন্দ পাচ্ছে কাল সেটা হারিয়ে যাবে। নিত্য নতুন ভোগ্যবস্তুর জন্য মন চঞ্চল হবে। ভোগের আনন্দ অচেতন মন মানুষের চেতন স্তরকে গ্ৰাস করে ফেলবে। আসুরী মানসিকতা এভাবেই তীব্র হয়ে ওঠে। সমাজকে গ্ৰাস করে আসুরী সভ্যতা। এর থেকে মোড় ফেরাতে শিক্ষা দেয় গীতা।—(সংকলক: সন্দীপ সিনহা)