দুর্গাপুর দর্পণ, নদিয়া, ২৩ জুন ২০২৩: ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন। বাবা-মা কোনও রকমে তাঁত বুনে সংসার চালান। সদ্য মাস্টার ডিগ্রি করে কাজের খোঁজে ব্যস্ত নদিয়ার (Nadia) শান্তিপুর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের যুবক সঞ্জিত প্রামানিক। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। মিলছে চাকরির প্রতিশ্রুতি। নির্বাচনের দিন দলের আরও অনেকের সঙ্গে গিয়েছিলেন বাবলা গ্রাম পঞ্চায়েতে।
সেদিন সকাল থেকেই নদিয়া জুড়ে বুথ দখল, ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ উঠছিল। বাবলা গ্রাম পঞ্চায়েতে শহর থেকে বহিরাগতরা গিয়েছে দেখেই স্থানীয় আদিবাসীরা বুথ পাহারা দিতে তির ছুড়তে শুরু করে দেয়। জখম হন কয়েকজন। তাদের অন্যতম ছিল সঞ্জিত। রক্তাক্ত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ পর তাদের উদ্ধার করে শান্তিপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ চিকিৎসা চলার পরে মৃত্যু (Murder) হয় সঞ্জিতের।
পাঁচ বছর পরে ফের এসেছে আরও একটি পঞ্চায়েত নির্বাচন। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান সঞ্জিত মারা গিয়েছে আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনে। আজও ছেলের ছবি বুকে নিয়ে দিনরাত কেঁদে চলেছেন বাবা-মা। বাবা রঞ্জিত প্রামানিকের অভিযোগ, গত পাঁচ বছরে কোনও উপকার পাননি শাসকদলের কাছ থেকে। দু’একজন তৃণমূল নেতা কখনও এসে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কাজ কিছু হয়নি। এখন তো আর কেউ খোঁজ নিতেও আসে না। তখন পাশে হাউ হাউ করে কেঁদে চলেছেন সঞ্জিতের মা।
শান্তিপুর পুরসভার কাউন্সিলর সুব্রত ঘোষ ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে কিছু ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে শান্তিপুর বিধানসভার বিজেপি কনভেনার সুব্রত কর বলেন, তৃণমূলের মদতে সন্ত্রাসে ওই ছেলেটি খুন হয় সেদিন। অথচ সেই পরিবারের খোঁজ রাখে না তৃণমূল। রাজ্য জুড়ে এমন কত অসহায় বাবা-মায়ের কোল খালি করছে তৃণমূল তার হিসাব নেই।’’