![](https://i0.wp.com/durgapur24x7.com/wp-content/uploads/2023/07/108-shiva-temple.jpg?fit=300%2C200&ssl=1)
দুর্গাপুর দর্পণ ডেস্ক, ১৮ জুলাই ২০২৩: সারা দেশে ১০৮ শিবমন্দির (108 Shiva Temples) আছে মাত্র দু’টি জায়গায়। সেই দু’টি জায়গাই রয়েছে পশ্চিম বঙ্গের পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman) জেলায়। প্রথম মন্দিরটি রয়েছে বর্ধমান (Bardhaman) থেকে সিউড়ি রোডে বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে নবাবহাট বাস টার্মিনাসের কাছে। দ্বিতীয়টি রয়েছে কালনায় (Kalna)। দু’টি মন্দিরই নির্মাণ করেছে বর্ধমান রাজপরিবার। তবে দুটি মন্দিরের গঠনশৈলীতে পার্থক্য রয়েছে যথেষ্ট।
বর্ধমানের ১০৮ শিব মন্দির: বর্ধমানের নবাবহাটে ১০৮টি শিবমন্দির রয়েছে আয়তাকারে। এই মন্দির ১৭৮৮ সালে নির্মাণ করেছিলেন মহারাজা তিলোকচন্দের স্ত্রী মহারাণী বিষ্ণান কুমারী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধু সন্ন্যাসীদের এনে জাঁকজমক করে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। বলা হয়ে থাকে, এই মন্দিরের নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৭৮৮ সালে। তবে ১০৮ নয়, আছে ১০৯টি শিব মন্দির। জপমালার মতো আছে ১০৮ টি মন্দির। বাকি মন্দিরটি একটু দূরে। ঠিক যেন গলার হারে লকেটের মতো! মন্দিরগুলির অবস্থান যেমন পাশাপাশি, তেমনই প্রতিটি মন্দিরের সামনেই আছে খোলা বারান্দা। প্রতিটি মন্দিরেই একটি করে দরজা। সব মন্দিরেই রয়েছে কষ্টিপাথরের গৌরীপট্ট-সহ শিবলিঙ্গ। প্রতিষ্ঠার সময়ে সব মন্দিরের সামনে একটি করে বেল গাছের চারা রোপন করা হয়েছিল।
কালনার ১০৮ শিব মন্দির: কালনার মন্দিরগুলি বৃত্তাকারে সাজানো। কালনার মন্দির বর্ধমান রাজ তেজচন্দ্র ১৮০৯ সালে নির্মাণ করান। মন্দিরের গঠনশৈলীতে বাংলার প্রখ্যাত আটচালা শিল্পের বৈশিষ্ট্য চোখে পড়ে। এই মন্দিরের কাঠামো দুটি সমকেন্দ্রিক বৃত্তের একটি সমন্বয়। একটি পুঁতির অক্ষমালাকে ফুটিয়ে তোলে। ভিতরের বৃত্তের পরিধি প্রায় ৩৩৬ ফুট। বাইরের বৃত্তের পরিধি ৭১০ ফুট। মন্দিরগুলি স্বল্প উঁচু ভিত্তিবেদীর উপর স্থাপিত। মন্দিরগুলি পরস্পর সংলগ্ন। মন্দিরগুলির উচ্চতা প্রায় ২০ ফুট এবং প্রস্থ ৯.৫ ফুট।
মন্দিরের দেওয়ালে রামায়ণ ও মহাভারতের পর্ব এবং শিকারের বহু দৃশ্য চিত্রিত রয়েছে। বাইরের দিকে আছে ৭৪টি মন্দির। ভিতরে আছে ৩৪টি মন্দির। প্রতিটিতে একটি করে শিবলিঙ্গ রয়েছে। ভিতরের প্রতিটি মন্দিরের শিবলিঙ্গ শুভ্র বর্ণের যা সদাশিবের প্রতীক। বাইরের বৃত্তের অর্ধেক শিবলিঙ্গ কৃষ্ণবর্ণের অর্থাৎ রুদ্রের প্রতীক। বাকি অর্ধেক শিবলিঙ্গ শুভ্র বর্ণের।
কীভাবে যাবেন? বর্ধমান স্টেশন থেকে গাড়ি করে নবাব হাট ও কালনা দুটি শিব মন্দিরই একদিনে দর্শণ করা যেতে পারে। আবার একদিন বর্ধমানের শিবমন্দির দেখে সেদিন বর্ধমানের অন্যান্য দর্শণীয় স্থান দর্শণ করা যেতে পারে। পরদিন কালনায় শিবমন্দির দেখতে যাওয়া যেতে পারে। কালনার অন্যান্য দর্শণীয় স্থান, পূর্বস্থলীর চূপির পাখিরালয় প্রভৃতিও দেখা যেতে পারে। (কৃতজ্ঞতা- পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন)