ক্ষমতার মত্ততা: কোন মানুষ আজকে খুব সরল ও সুন্দর। কাল তার পদোন্নতি ঘটিয়ে এক ক্ষমতাধিকারযুক্ত পদে বসানো হলো। পরের দিনই তার আচরণ বদলে গেল। “তুমি কি জান না আমি কে?” ঐ ফেটে পড়া কথাতেই তার ক্ষমতার প্রকাশ শুরু। এতে বোঝা যায় ঐ ব্যক্তি ক্ষমতা হজম করতে পারে নি। ক্ষমতা হজম করতে না পারলেই ব্যক্তিকে মত্ত করে তুলবে। ঠিক যেমন মদ্যপানের মাত্রা একটু বেশি হলে মন মাতাল হয়ে যায়, ক্ষমতাও তেমনি মাত্রাতিরিক্ত হলে মানুষ মত্ত হয়ে যায়।
মহাভারতের উদ্যোগপর্বের একটি শ্লোকে সুন্দরভাবে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে। প্রথম মত্ততা হলো বিদ্যা বা জ্ঞান থেকে। আমার এত বিদ্যা, তোমার থেকে আমার জ্ঞান বেশি—এই হলো বিদ্যার অহঙ্কার। দ্বিতীয় হলো ধন-মদঃ, অর্থের অহঙ্কার। তৃতীয় হলো বংশপরিচয়ের অহঙ্কার। বলা হয়েছে, এইসব মত্ততাগুলি কেবল অমার্জিতরুচি, সংস্কৃতিহীন লোকেদের জন্য। উদারমনা লোকেদের কাছে এই মদগুলি দমস্বরূপ হয়ে যায়। মদ টাকে উল্টে নিলেই দম, অর্থাৎ মদের বিপরীত আত্মসংযম। একমাত্র আধ্যাত্মিক ভাবনা ও শক্তির সাহায্যে এই মত্ততাগুলি হজম করা যায়। যোগ অভ্যাসের দ্বারা মানুষ আধ্যাত্মিক শক্তি লাভ করে এই মত্ততা সংযমে রূপান্তরিত করতে পারে। (সংকলক: সন্দীপ সিনহা)