সনাতন গড়াই, কাঁকসা: সেবার হঠাৎ গ্রামে নেমে এসেছিল ব্যাপক দুর্যোগ। শুরু হয়েছিল হাহাকার। না খেতে পেয়ে মরতে বসেছিল অনেকে। দেবীর স্বপ্নদেশে পুজো শুরু হতেই শ্রীবৃদ্ধি শুরু হয় গ্রামের মানুষের। প্রায় আড়াইশো বছর আগে শুরু হওয়া সেই দুর্গাপুজো আজ সর্বজনীন। শোনা যায়, ১২০০ বঙ্গাব্দে অবিভক্ত বর্ধমান জেলার শেষ প্রান্তে মলানদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘন জঙ্গলের মাঝে ছিল ভগবানপুর গ্রাম। কয়েকশো মানুষের বসবাস ছিল। গ্রামের মন্দিরে দুর্গা পুজো করতেন এলাকার বাসিন্দারা। একসময় চোর-ডাকাতের দল হামলা শুরু করে গ্রামে। শুরু হয় লুটপাট, খুন। সেই আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান বাসিন্দারা।
তাঁদের অনেকে আশ্রয় নেন বিদবিহার গ্রাম পঞ্চায়েতে শেষ প্রান্তে, জাম গাছের বনে। আসতে আসতে গড়ে ওঠে ঘর বাড়ি। গ্রামের নাম দেওয়া হয় জামবন। শুরু হয় চাষবাস। ভগবানপুর গ্রাম শূন্য হতেই স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে বন্ধ হয়ে যায় দেবী বন্দনা। জামবন গ্রাম গড়ে ওঠার কয়েক বছর পর অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। খরায় নষ্ট হয়ে যায় এলাকার সব ধান জমি। গোটা গ্রাম জুড়ে শুরু হয় হাহাকার। দুমুঠো খাবার না পেয়ে প্রাণ হারান অনেকে। সেইসময় দেবী এলাকার বিনোদ বিহারী রায়কে স্বপ্নাদেশ দেন, পুজো শুরু করার জন্য। সেই স্বপ্নাদেশ পেয়ে গ্রামে শুরু হয় দশভূজার আরাধনা। তারপরেই গ্রামের মানুষের দুর্দশা দূর হয়। ফলতে থাকে ফসল। গ্রামের মানুষের শ্রীবৃদ্ধি হতে থাকে।
( BCREC & Group of institutions । পূর্ব ভারতের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 933927844, 9832131164, 9932245570, 9434250472)
এলাকার প্রাক্তন শিক্ষক সুদেব রায় বলেন, “দেবী খুব জাগ্রত। একসময় এলাকায় বিনোদ বিহারী রায় পুজো শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে তিনি এলাকার কিশোর সমিতি ক্লাবকে পুজো পরিচালনার দায়িত্ব দেন। এলাকায় একটাই দুর্গাপুজো হয়। মাকে শ্যামারূপা রূপে ডাকা হয়। গোটা গ্রামের মানুষ চার দিন ধরে একত্রিত হন পুজোয়। অষ্টমীর সন্ধিক্ষণে গড় জঙ্গল থেকে অলৌকিক তোপধ্বনি শোনা যাওয়ার পরেই এখানে হয় চাল কুমড়ো বলি। নবমীতে ২ হাজার মানুষের জন্য অন্ন কূটের ব্যবস্থা থাকে। তাই এই পুজো আজ সর্বজনীন।” (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।