প্রতি ৩ লক্ষ সদ্যজাতের মধ্যে মাত্র একজন ALCAPA ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে প্রতি একশো শিশুর মধ্যে ৯০ জন এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই মারা যায়।
——————————————-
দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর, ২৭ জানুয়ারি ২০২৪: শিশুটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। সর্দি, ঠান্ডা লাগে শুধু। বাবা-মা বিভিন্ন শহরে, বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন। ফল কিছু হয়নি। শেষ পর্যন্ত এক পরিজনের কাছে খোঁজ পেয়ে তাঁরা একরত্তি খুদেকে নিয়ে আসেন পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে (Mission Hospital Durgapur)। তখন তার বয়স মাত্র ৪০ দিন। ওজন সাড়ে তিন কেজি। শ্বাস নিতে প্রবল সমস্যা হচ্ছে।
বীরভূমের এক প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়ি দম্পতির। বিয়ের প্রায় ৯ বছর পরে সন্তান এসেছে। অথচ জীবনের সেই সবচেয়ে মূল্যবান উপহারকে কীভাবে সামলে রাখবেন তা ভেবে ভেবে সারা রাত দু’চোখের পাতা এক করতে পারেন না তাঁরা। জানুয়ারির মাঝামাঝি তাঁরা আসেন দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে। হাসপাতালের শিশু হৃদয়শল্য বিশেষজ্ঞ রাজর্ষি ঘোষের তত্বাবধানে ভর্তি হয় বাচ্চাটি।
পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা যায় শিশুটির হার্টে বিরলতম এবং মারাত্মক এক জন্মগত ত্রুটি রয়েছে। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলে ALCAPA। এটি এমন এক ত্রুটি যখন বাম করোনারি ধমনী পালমোনারি ধমনী থেকে অস্বাভাবিকভাবে উদ্ভূত হয়। সাধারণত, প্রতি ৩ লক্ষ সদ্যজাতের মধ্যে একজন এমন ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে প্রতি একশো জনে ৯০ জন এক বছর হওয়ার আগেই মারা যায়।
মিশন হাসপাতালের শিশু হৃদয়শল্য বিশেষজ্ঞ রাজর্ষি ঘোষ আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি। টিম বানিয়ে নিয়ে দ্রুত শিশুটির অস্ত্রোপচারের উদ্যোগ নেন। কারণ, অস্ত্রোপচার ছাড়া আর কোনও প্রতিকার নেই। ১৫ জানুয়ারি দীর্ঘ সময় ধরে অস্ত্রোপচার চলে। সাফল্যের সঙ্গে শেষ হয় অস্ত্রোপচার। শিশুটি এখন সুস্থ আছে।
শিশুটির বাবা-মা বলেন, ‘‘আমরা কার্যত আশাহত হয়ে পড়েছিলাম। তবে মিশন হাসপাতালে আসার পরে চিকিৎসক থেকে শুরু করে কর্মীরা যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা বলার নয়। আমাদের সন্তান এখন অনেকখানি সুস্থ আছে। আশা করি শীঘ্র ওকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারব।’’ (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।