সব শেষে সেই চুলের বান্ডিল পরচুলা বানানোর জন্য রফতানি হয়ে যায় বিদেশে।
——————————————-
দুর্গাপুর দর্পণ ডেস্ক, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩: চিরুনিতে আটকে যাওয়া চুল আর ফেলবেন না। প্রতি কেজি চুলে পাবেন পাঁচ হাজার টাকা! সত্যিই। আগে ঝরে পড়া চুলের বিনিময়ে ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে কমদামি স্টিলের বাটি, চামচ, প্লাস্টিকের টিফিনবক্স এসব মিলত। আর, এখন মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙা ও সংলগ্ন গ্রামগুলির মহিলারা চিরুনিতে আটকে যাওয়া চুল জমিয়ে জমিয়ে হাজার হাজার টাকা রোজগার করছেন।
কীভাবে? জানা যায়, গ্রামের এক জন প্রথম মেদিনীপুর থেকে চুলের ব্যবসা সম্পর্কে জেনে আসেন। এরপর তিনি শুরু করেন চুলের ব্যবসা। প্রথমে বিভিন্ন জায়গা থেকে চিরুনিতে আটকে যাওয়া গুটলি পাকানো চুল সংগ্রহ করে আনা হয়। এরপর সেই চুলের জট ছাড়িয়ে প্রতিটি চুল আলাদা করা হয়। এরপর দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ভাগ করা হয় চুলগুলিকে। কমপক্ষে ৮ ইঞ্চি না হলে সেই চুল কাজে আসে না।
তার পর সেই চুল বিশেষ ধরণের চিরুনি দিয়ে সোজা করা হয়। এবার সেই চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে পালিশ করা হয়। সব শেষে সেই চুলের বান্ডিল পরচুলা বানানোর জন্য রফতানি হয়ে যায় বিদেশে। মুর্শিদাবাদ থেকে চুল মূলত যায় চিন ও মায়ানমারে। এক কেজি চুলের দাম পাওয়া যায় ৫০০০ টাকা!
চুল সংগ্রহের পরে রফতানি যোগ্য করে তোলার কাজের অধিকাংশ করেন মহিলারা। এক কেজি গুটলি পাকানো চুলের জট ছাড়ানোর কাজ করে দিনে তাঁরা দু’-তিনশো টাকা রোজগার করেন। এরপর জট ছাড়ানো চুলগুলো দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ভাগ করার কাজে কেজি প্রতি সত্তর-আশি টাকা মজুরি মেলে। এরপর বিশেষ চিরুনি দিয়ে চুল সোজা করা, চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধোওয়া, শুকানো, পালিশ করা, বান্ডিল তৈরি করা, এসবের জন্য এক এক রকম মজুরি মেলে।
মুর্শিদাবাদের ওই সব এলাকায় গেলেই দেখা যায়, ঝকঝকে চুলের অফিস। খোঁজ নিলেই জানা যায়, চুলের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থেকে অনেকেই নিশ্চিত রোজগার করছেন। জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। গ্রামীণ এলাকার অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। পড়াশোনার হার বেড়েছে। চুরি, ছিনতাইয়ের হারও কমেছে। ঝড়ে পড়া চুলেই লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে মুর্শিদাবাদের মহিলাদের! (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।