প্রতিষেধক: বৃহদারণ্যক উপনিষদে আছে, ঋষি যাজ্ঞবল্ক্য রাজা জনককে বলছেন : জনক, তুমি ভয়হীন অবস্থা অর্জন করেছ। ভয়হীনতার মাধ্যমেই তোমার আধ্যাত্মিক ভাবের উৎকর্ষ সাধিত হতে পারে ; দুর্বলতার মাধ্যমে নয়। সব পশুই দুর্বল, তারা জন্তু। একমাত্র মানব সত্তাই ভয়হীন হতে পারে নিজ অন্তরে অধিষ্ঠিত ঈশ্বরসত্তার অনুভূতিতে।
শক্তিই হলো জাগতিক ব্যাধির একমাত্র প্রতিষেধক। এই হলো বেদান্তের বাণী। আধ্যাত্মিকতার পথে আমরা যতই অগ্ৰসর হব, ততই আমরা নির্ভীক, শক্তিমান ও হৃদয়বান হব। দুর্বলতা দিয়ে দুর্বলতাকে দূর করা যায় না। শ্রীকৃষ্ণ বিষাদগ্ৰস্ত অর্জুনকে বললেন, ক্লৈব্যের কাছে অর্থাৎ দুর্বলতা, শক্তিহীনতার কাছে নতি স্বীকার করো না। এ তোমাতে শোভা পায় না। তুমি এত বড় বীর, তুমি এত মহান, এত বিরাট। উত্তিষ্ঠ, উঠে পড়, হৃদয়ের এই দুর্বলতা যা ক্ষুদ্র, হীনতা তাকে ত্যাগ কর।
শ্রীকৃষ্ণের এই কথা আমাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। *যখন আমরা বিপদে পড়ি এবং আমাদের অন্তর্নিহিত শক্তি সম্বন্ধে অজ্ঞ হয়ে থাকি, তখন আমরা মনে করি, আর অগ্ৰসর হওয়া যেন আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়, তখন আমরা ভেঙে পড়ি। তখন আমাদের নব বলের সঞ্চার ঘটাতে কাউকে এগিয়ে আসতে হয়।—(সংকলক : সন্দীপ সিনহা)