ক্ষমতার বদহজম: মহাভারতের উদ্যোগপর্বের শ্লোক—বিদ্যামদো ধনমদঃ তৃতীয়োহভিজানো মদঃ, এতে মদা অবলিপ্তানাম্ এত এব সতাম্ দমাঃ। প্রথম মদ বা মত্ততা হলো বিদ্যা বা জ্ঞান থেকে। ‘জানো আমার এত বিদ্যা, এত জ্ঞানী’— এই হলো বিদ্যার অহঙ্কার বা বিদ্যামদঃ। দ্বিতীয় হলো ধনমদঃ। এতদিন গরিব ছিলাম, হঠাৎ কিছু টাকা হয়েছে এতেই আমি মত্ত। তৃতীয় হলো অভিজনো-মদ বা বংশ পরিচয়জনিত মত্ততা বা অহঙ্কার।
দ্বিতীয় ছত্রে বলা হয়েছে— এইসব মদগুলি কেবল অবলিপ্ত, অমার্জিতরুচি সংস্কৃতিহীন লোকেদের জন্য। কিন্তু এতে এব সতাম্ দমাঃ, উদারমনা লোকের কাছে এই মদ বা অহংকার গুলিই দমস্বরূপ হয়ে যায়। যদি মদ শব্দের অর্থ হয় মত্ততা, দম শব্দের অর্থ হবে সম্পূর্ণ আত্মসংযম। যে নর বা নারী ক্ষমতাকে হজম করেছেন তাদের মত্ত করা সহজ নয়।
রামায়ণে দেখা যায় রামচন্দ্র কিভাবে ক্ষমতাকে হজম করেছিলেন। প্রকৃত মহৎ ব্যক্তির জীবনে সবরকম মদ বা মত্ততা, দম অর্থাৎ সংযমে রূপায়িত হয়। অতিরিক্ত মদ খেয়ে যেমন অনেকে মাতাল হয়ে যায়, তেমনি অতিরিক্ত ক্ষমতা পেয়েও অনেকে হজম করতে না পেরে মত্ত হয়ে যায়। একমাত্র আধ্যাত্মিক শক্তির সাহায্যে সকল মদ দমে বা সংযমে রূপায়িত হয়।—(সংকলক: সন্দীপ সিনহা)