বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের টানাপড়েন এবং মোবাইলে থাকা ঘনিষ্ঠ মুহুর্তের ভিডিও দেখিয়ে প্রেমিকাকে ব্ল্যাকমেল করছিল প্রেমিক। সেই কারণেই প্রেমিকা ও তার দাদার হাতে খুন হতে হয় ছোটনকে।
—————————————-
দেখুন ভিডিও
দুর্গাপুর দর্পণ, দুর্গাপুর, ২৫ নভেম্বর ২০২৩: প্রেমিককে খুন করে ভাড়া বাড়ির মধ্যেই সারারাত থাকলো প্রেমিকা এবং তার দাদা। সকালে সুযোগ বুঝে বাইরে থেকে ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেল তারা। প্রেমিকাকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে তার দাদাকেও। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের ফরিদপুরের ভাড়া বাড়িতে।
বৃহস্পতিবার ঘরের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে বাড়ির মালিক গৌতম সাহা থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে তালা ভেঙে এক যুবকের পচন ধরা দেহ উদ্ধার করে। তার চোখ ঠিকরে বেরিয়েছিল। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম ছোটন দুবে (২৫)। বিহারের ছাপড়া জেলার বাসিন্দা। গান্ধী মোড়ের বেসরকারি হাসপাতালে আত্মীয়ের চিকিৎসা করাতে এসেছে বলে ঘর ভাড়া নিয়েছিল সে। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পুলিশ নিশ্চিত হয়, ওই যুবককে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের টানাপড়েন এবং মোবাইলে থাকা ঘনিষ্ঠ মুহুর্তের ভিডিও দেখিয়ে প্রেমিকাকে ব্ল্যাকমেল করছিল প্রেমিক। সেই কারণেই প্রেমিকা ও তার দাদার হাতে খুন হতে হয় ছোটনকে। তদন্তে নেমে পুলিশ ছোটনের মোবাইলের কল লিস্ট পরীক্ষা করে ধান্ডাবাগ বাগানপাড়ার বাসিন্দা কিশোর পান্ডের স্ত্রী পূজা পান্ডের মোবাইল নম্বর পায়। সেই সুত্র ধরে পুলিশ পৌঁছায় পূজার কাছে। তাকে প্রথমে আটক ও পরে গ্রেফতার করে পুলিশ।
দুর্গাপুর মহিলা থানার পুলিশ ও তদন্তকারী অফিসারদের জেরার সামনে পূজা জানায়, তার দাদা মিতিন মন্ডল রাজস্থান থেকে এসে গত ১৫দিন ধরে তার কাছে ছিল। তার স্বামী পুরুলিয়ায় চাকরি করে। কেন এবং কীভাবে দাদার সঙ্গে মিলে তারা ছোটনকে খুন করেছে তা জানিয়ে দেয়। পুলিশ জানতে পারে, ছোটনের সঙ্গে পূজার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে। সেই সময় দুজনের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ক্যামেরাবন্দি করে রেখেছিল ছোটন।
জানা গিয়েছে, পূজার স্বামী পূজার এবং ছোটনের সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ার পর তাদের মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকতো। পূজা ছোটনের সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিল। তখন ছোটন পূজাকে মোবাইলে তাদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি দেখিয়ে, সেই ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করছিল। তাই পূজা তার দাদা মিতিনকে নিয়ে ছোটনকে খুনের পরিকল্পনা করে। এরপরেই ছোটনকে ডাকা হয় দুর্গাপুরে।
পুলিশের অনুমান, গত মঙ্গলবার রাতে মিতিন ও পূজা ফরিদপুরে ছোটনের ভাড়া বাড়িতে যায়। ছোটনকে প্রচুর মদ খাইয়ে তার গলা টিপে তাকে খুন করে। রাতে বাড়ির মালিক সদর দরজা বন্ধ করে দেওয়ায় ছোটনের দেহের সঙ্গেই সারা রাত ঘরে ছিল পূজা ও মিতিন। ভোরে সদর দরজা খোলা হলে ছোটনের ঘর বাইরে থেকে তালা দিয়ে সুযোগ বুঝে তারা পালিয়ে যায়। মিতিন এবং পূজা ধান্ডাবাগের বাড়িতে ফেরে। পূজাকে পুলিশি হেফাজত চেয়ে শনিবার তোলা হয় দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে। মালদা থেকে ধৃত পূজার দাদা মিতিনকে আনা হচ্ছে দুর্গাপুরে। (বিশেষ বিশেষ ভিডিও দেখতে DURGAPUR DARPAN ইউটিউব চ্যানেলটিও সাবস্ক্রাইব করুন)।